Naxalbari | বাবা চা শ্রমিক, মা নেই! প্রতিকূলতাকে হারিয়েই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণ নকশালবাড়ির অপর্ণার

Naxalbari | বাবা চা শ্রমিক, মা নেই! প্রতিকূলতাকে হারিয়েই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণ নকশালবাড়ির অপর্ণার

ব্লগ/BLOG
Spread the love


নকশালবাড়ি: বাবা চা শ্রমিক। মা নেই, জীবনে প্রতিকূলতার অভাব ছিল না নকশালবাড়ির অটল চা বাগানের সাতভাইয়া ডিভিশনের মেয়ে অপর্ণা লিম্বুর। কিন্তু সেই সব প্রতিকূলতাকেই দূরে ঠেলে আজ চিকিৎসক (Physician) হওয়ার স্বপ্নপূরণ করেছেন তিনি। শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়ি (Naxalbari) গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত এলাকায় এই চা বাগান। বাগানের সাতভাইয়া ডিভিশনে প্রায় ছয়শো শ্রমিকের বসবাস। চিতাবাঘ, হাতির হানা নিত্যদিনের ঘটনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকায় জীবনযাপন করেন শ্রমিকরা। কয়েক বছর আগে এই গ্রাম সংসদ এলাকা থেকে পাচার হয়ে যাওয়া তিনজন নাবালিকাকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। এখানকার অনেকেই অভাবের তারণায় স্কুল ছেড়ে বাইরের রাজ্যে পাড়ি দেয় কাজের খোঁজে।

এলাকায় পড়াশোনার একমাত্র মাধ্যম সাতভাইয়া শিশুশিক্ষা কেন্দ্র। তারপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য ছুটতে হয় বাগডোগরা কিংবা নকশালবাড়িতে। এতেই হার মেনে যান অনেক বাবা-মা। তবে হার মানেননি বড়া লাইনের অপর্ণা লিম্বু। নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যেও অবিরাম লড়াই করে গিয়েছেন অপর্ণা। নকশালবাড়ির হাতিঘিসা ভিনসেন্ট হাইস্কুল থেকে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়ে ২০১৬ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপরই শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে নিটের জন্য প্রস্তুতি নেন। দু’বার পরীক্ষা দেওয়ার পর ২০১৯ সালে ৪২০ নম্বর পেয়ে নিট পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপরই মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে এমবিবিএসের জন্য ভর্তি হন। গত মে মাসে ডাক্তারি ডিগ্রি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

সাতভাইয়া রেললাইন পেরিয়ে ম্যানেজার বাংলোর পাশেই রয়েছে অপর্ণা লিম্বুদের শ্রমিক আবাস। বাবা কমল লিম্বু সাতভাইয়া চা বাগানের শ্রমিক। এলাকার সকলেই তাঁর সাফল্যতে খুশি। ডাক্তারি পড়াকালীন মা আম্বু লিম্বু মারা যান। এদিন নিজের ঘরে বসে জীবন সংঘর্ষের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল চলে আসে অপর্ণার। তবে এখন সব দুঃখই মুছে গিয়েছে। এলাকায় চিকিৎসক হিসেবে পরিচিত তিনি।

শ্রমিকরাও অপর্ণার সাফল্যে খুব খুশি। অপর্ণা বলেন, ‘আমি পরিবারকে সবসময় পাশে পেয়েছি। আমার স্বপ্নই ছিল চিকিৎসক হওয়ার। চা বাগানের প্রতিটি ছেলে-মেয়েকে আমি এই পরামর্শই দেব, তাঁরা যেন নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছোতে পরিশ্রম করে।’ বাবা কমল লিম্বু বলেন, ‘একসময় বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। হাতির হানায় ঘর পর্যন্ত ভেঙে যায়। কিন্ত তারপরও ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা বাদ দিইনি। আজ মেয়ে চিকিৎসক হওয়ায় সব দুঃখই ঘুচে গিয়েছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *