দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: অগাস্ট মানেই স্বাধীনতার মাস। এই আবহেই জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রায়গঞ্জের রায়পুরের বাসিন্দা দীপেশ পাল। মঙ্গলবার বিকেলে রায়গঞ্জের কসবা নেতাজি মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন তবলার শিক্ষক দীপেশ। হঠাৎই তাঁর নজরে আসে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ের দিকে চলেছে একটি ট্রাক, যার বনেটে উলটোভাবে লাগানো জীর্ণ জাতীয় পতাকা। দেশের স্বাধীনতার প্রতীকের এই অবমাননা তিনি মেনে নিতে পারেননি। সঙ্গে সঙ্গে মোটরবাইকে উঠে ধাওয়া করেন ট্রাকটির পিছনে। কিছুদূর যাওয়ার পর ট্রাকটি থামিয়ে চালককে দীপেশ জানান, গাড়িতে জাতীয় পতাকাটি উলটোভাবে লাগানো আছে। পতাকার অনেকটা অংশ ছেঁড়া। এভাবে জাতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘোরাফেরা করা মানে দেশকে অপমান করা। তিনি অনুরোধ করেন পতাকাটি খুলে তাঁর হাতে দিতে। চালক ও খালাসি অজ্ঞাতসারে এই ভুল করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পতাকাটি খুলে দেন দীপেশের হাতে। এরপর দীপেশ ওই পতাকা নিয়ে সটান পৌঁছে যান রায়গঞ্জের মহকুমা শাসকের দপ্তরে। যথাযোগ্য মর্যাদায় পতাকাটি তুলে দেন প্রশাসনের হাতে।
দীপেশ পাল বলেন, ‘জাতীয় পতাকার অবমাননা মানে দেশকে অসম্মান করা। তাই পতাকাটি মহকুমা শাসকের হাতে তুলে দিয়েছি।’ ঘটনার কথা জেনে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বঙ্গরত্ন অমিত সরকার বলেন, ‘জাতীয় পতাকা উলটোভাবে তোলার ঘটনা প্রায়শই শোনা যায়। কিন্তু একজন তবলা শিক্ষক যেভাবে জতীয় পতাকার সম্মান রক্ষা করলেন, তা সত্যিই নজিরবিহীন।’
রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কালীচরণ সাহার কথায়, ‘দীপেশবাবুর মতো দেশ ও জাতীয় পতাকার প্রতি এমন আবেগ ও কর্তব্যবোধ প্রতিটি ভারতবাসীর মনেই সদাজাগ্রত থাকুক।’ মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতিও দীপেশের এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।