উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে নিরাপত্তার বলয়ে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে পুরো এলাকা। দুর্গাপুরের নেহেরু স্টেডিয়ামে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে দুপুর আড়াইটের দিকে। প্রধানমন্ত্রীর বাংলা সফর ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই সাজোসাজো রব গোটা দুর্গাপুর জুড়ে। সূত্রের খবর, অন্ডাল বিমান বন্দর থেকে সভাস্থল পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার পথ সড়ক পথেই যাবেন প্রধানমন্ত্রী। মোদিকে স্বাগত জানানোর সবরকমের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সারা হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের গান্ধী মোড় থেকে নেহেরু স্টেডিয়াম পর্যন্ত মোট ৮ টি জায়গায় মোদিকে স্বাগত জানাতে পুষ্পবৃষ্টি করা হবে। মোদির যাত্রাপথ সেজে উঠেছে তাঁর বড় বড় কাট আউটে। তৈরি করা হয়েছে ওভারহেড গেট।
তবে মোদির এই সফর বাংলার মানুষের জন্য বেশ কিছু সুখবরও নিয়ে আসতে চলেছে বলেই শোনা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, আজ পশ্চিমবঙ্গে এক বিশাল অঙ্কের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রায় ৫০০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে যেমন- তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, সড়ক এবং রেলের উন্নয়নে গতি আনবে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে এই খবরটি জানানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পেট্রোলিয়াম খাতে প্রায় ১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থ বরাদ্দ হতে চলেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন প্রকল্প, যা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় কার্যকর হবে। এছাড়াও, দুর্গাপুর থেকে কলকাতা পর্যন্ত ১৩২ কিলোমিটার প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইন প্রকল্পেরও উদ্বোধন করা হবে আজ। এই পাইপলাইনটি পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও নদিয়া জেলার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে এবং এর জন্য অতিরিক্ত ১ হাজার ১৯০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং পরিবেশবান্ধব শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবেশ সুরক্ষাতে জোর দিতে বিদ্যুৎ খাতেও আসতে চলেছে বড় আকারের বিনিয়োগ। আজ দুর্গাপুর ও রঘুনাথপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনে পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের জন্য বিশেষ সিস্টেম সংযোজন প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ প্রায় ১ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনকে আরও বেশি পরিবেশ-বান্ধব করে তুলবে।
বাংলার রেল যোগাযোগেও খুলে যেতে পারে নতুন দিগন্ত কারণ রেল উন্নয়ন খাতেও আজ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের শিলান্যাস হতে চলেছে। এর মধ্যে অন্যতম হল পুরুলিয়া-কোটশিলা ৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন প্রকল্প, যার জন্য প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এই প্রকল্পটি জামশেদপুর, বোকারো ও ধানবাদের শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে রাঁচি ও কলকাতাকে যুক্ত করে আঞ্চলিক যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা যোগ করবে। এই বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ পশ্চিমবঙ্গের সামগ্রিক পরিকাঠামো উন্নয়নে এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।