মুর্শিদাবাদ: না, কাউকে জানিয়েই কোন সুরাহা মেলেনি! বারংবার দুয়ারে ঘুরেও কোনও ফল হয়নি। আর তাই অন্যের ওপর মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে গ্রামবাসীরা নিজেরাই দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে সংস্কার করলেন নিকাশি ব্যবস্থার। এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের লালবাগ মহকুমার অন্তর্গত নবগ্রাম এলাকায়। বিপাকে পড়ে তড়িঘড়ি ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে পঞ্চায়েত সমিতি।
একদিকে যেমন বিদ্যালয় চত্বরে কচিকাচাদের চলার পথে ঘন কাদার উপর জল থৈ থৈ পরিবেশ। সেই সঙ্গে নিত্যদিনের সমস্যা। তাই গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে জল নিষ্কাশনে নিজেরাই কোমর বেঁধে কাজ শুরু করে দেন। আর এর জেরে নড়ে চড়ে বসে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি। তড়িঘড়ি অর্থও বরাদ্দ করা হয় নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য। এই ব্যাপারে নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ এনায়েতুল্লাহ জানান, “সিপিএম-কংগ্রেস জোট পরিচালিত পাঁচগ্রাম পঞ্চায়েত কোনও কাজ করছে না। স্থানীয় বাসিন্দা ও পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই ওই কাজের জন্য দ্রুত বরাদ্দ করা হয়ে গিয়েছে”।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পাঁচগ্রাম এলাকায় একটি প্রায় ৬০ মিটার নিকাশি নালা তৈরির জন্য নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি এপ্রিল মাসে বরাদ্দ করে। কিন্তু যে জায়গার জন্য ওই বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেখানে কাজ না করে পাঁচগ্রাম উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন দিকের দেওয়াল ঘেঁষে নিকাশি নালা গড়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করে ঠিকাদার সংস্থা। স্বাভাবিক ভাবে পঞ্চায়েত ওই কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে নিকাশি নালার জন্য খনন করা খালও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতেই বিদ্যালয় চত্ত্বরে কাঁদার উপর জল জমতে শুরু করে। এই ব্যাপারে বাম-কংগ্রেস জোট পরিচালিত পাঁচগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সালমা ইয়াসমিন বলেন, “যেখানে ঠিকাদার নিকাশি নালার কাজ শুরু করেছিল তার জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হই। এটা তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের চক্রান্ত ছিল।”
এলাকায় জল জমা নিয়ে বাসিন্দারা এর আগে বিক্ষোভও দেখান। বিক্ষোভে কোনও সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে নিজেরাই চাঁদা তুলে গ্রামের জল নিষ্কাশনের জন্য আর্থমুভার লাগিয়ে মাটি খননের কাজ শুরু করে দেন। স্থানীয় বাসিন্দা নাজির শেখ বলেন, “কোনও গত্যান্তর না দেখে ভোগান্তির মধ্যে পড়ে নিজেরাই চাঁদা তুলে জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছি। স্থানীয় পঞ্চায়েত নিকাশি নালা বন্ধ করেছিল। পঞ্চায়েত সমিতি নিকাশি নালা তৈরির জন্য বরাদ্দ করেছে শুনে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। এবার হয়তো জল জমার সমস্যা থেকে মুক্তি পাব।”
এদিকে নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে গ্রামবাসীরা সরব হতেই তড়িঘড়ি অর্থ বরাদ্দ করে পঞ্চায়েত সমিতি। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপলাল মণ্ডল বলেন, “সবদিক খতিয়ে দেখে ৩৫০ মিটার লম্বা নিকাশি নালা তৈরির জন্য প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হল।”