মেখলিগঞ্জঃ প্রায় দেড় মাস ধরে সাপের উপদ্রবে অতিষ্ঠ মেখলিগঞ্জ ব্লকের ৯৪ ফুলকাডাবরি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। ক্লাস চলাকালীন ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ছে সাপ। শুধু ক্লাসরুম নয়, অফিস রুম থেকে মিড-ডে-মিলের রান্নাঘরেও রয়েছে সাপের আনাগোনা। সাপের আতঙ্কে বেশ কিছুদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে চলছে স্কুলের পঠনপাঠন। শিক্ষকরা নিজের উদ্যোগে স্কুলের আশপাশের জঙ্গল পরিষ্কার ও কার্বলিক অ্যাসিড ছিটিয়েও সমাধান করতে পারেননি। ফলে পড়াশোনার পরিবেশ একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। নিরাপত্তার কারণে বহু অবিভাবক সন্তানদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন।
এদিকে, সাপের আনাগোনা বন্ধ করতে না পারায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অবিভাবকরা। বিক্ষোভে অবরুদ্ধ হয়ে যায় ধাপড়াহাট–মেখলিগঞ্জ রাজ্য সড়ক। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলায় যান চলাচল ব্যাহত হয় গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায়। পরে কুচলিবাড়ি থানার ওসি ভাস্কর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করলে অবরোধ উঠে যায়।
আন্দোলনকারী ছাত্র সুব্রত বর্মন জানায়, “দেড় মাস ধরে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করছি। আমরা চাই স্কুল কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিক। আমরা ক্লাসরুমে পড়তে চাই।” হাতে লেখা প্ল্যাকার্ডে স্লোগান ওঠে, “সাপ আছে ঘরে, আমরা আছি বাইরে।” ছাত্রী দেবাঞ্জনা সরকার বলে, “এইভাবে স্কুলে আসতে খুব ভয় হয়। বাড়ি থেকেও অনেকে আটকায়। তবুও ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসতে হয়।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিঠুন দেব দাস বলেন, “আমরা নিজেদের চেষ্টায় সাপ তাড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। একটি ভাঙা ঘর রয়েছে, সম্ভবত সেখানেই সাপের আস্তানা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
এ প্রসঙ্গে মেখলিগঞ্জ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (দক্ষিণ চক্র) বরুণ বিশ্বাস জানান, “ডিআই ও ডিপিএসসি অফিসে জানানো হয়েছে। বনদপ্তরকেও অবহিত করা হয়েছে। আজকেই আবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। বনদপ্তরের কর্মীরা আগেও এসে সাপ দেখেছেন, তবে স্থায়ী সমাধান হয়নি।”