শমিদীপ দত্ত, শিলিগুড়ি: প্রতিবেশী দুই নাবালকের লালসার শিকার বিশেষভাবে সক্ষম এক তরুণী (Matigara Rape Case)। অভিযোগ, বাড়িতে একা থাকার সুযোগে দিনের পর দিন ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হয় তরুণী গর্ভবতী হয়ে পড়লে। তরুণীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দুই নাবালককে গ্রেপ্তার করেছে মাটিগাড়া থানার পুলিশ।
সোমবার মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকলে কলেজ ও হাসপাতালে (NBMCH) নিয়ে গেলে সেখানেও চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। পুলিশের অভিযোগ, ওই তরুণীকে রীতিমতো ইচ্ছে করে বসিয়ে রাখেন দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক। মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে। পরে সুপার অফিসের হস্তক্ষেপেই সমস্যা মেটে।
মাটিগাড়া থানার আইসি অরিন্দম ভট্টাচার্য বলছেন, ‘চার ঘণ্টা বসে থাকায় মেয়েটি অসুস্থ বোধ করতে শুরু করে। আমার থানার মহিলা পুলিশকর্মী এরপর মেডিকেল সুপারের ঘরে গিয়ে বলার পর কাজ হয়। এরকম চলাটা তো উচিত নয়। এব্যাপারে আরও সহনশীল হতে হবে মেডিকেল কর্তৃপক্ষকে।’
অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় এনিয়ে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য মেলেনি। যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি হাসপাতাল সুপারের সঙ্গেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, মাটিগাড়া থানা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিবার বলতে শুধু তাঁর মা। ওই মহিলা বালি-পাথর তোলার কাজ করায় সারাদিন তরুণী বাড়িতে একাই থাকতেন। তরুণীর মা বলছেন, ‘কিছুদিন ধরেই মেয়ের শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। রবিবার বমি করতে থাকায় আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর সেখানে থাকা চিকিৎসক জানান, আমার মেয়ে আড়াই মাসের গর্ভবতী।’
এরপর তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই তিনি জানান, এলাকার দুই নাবালক প্রায়শই তাঁর একা থাকার সুযোগ নিয়ে ঘরে ঢুকত। একাধিকবার তারা তরুণীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ। যদিও তিনি আগে কেন মাকে বিষয়টি জানালেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশ অবশ্য মনে করছে, তরুণীর মানসিক কিছু সমস্যার দরুনই বিষয়টি জানাতে পারেননি।
ঘটনা জানাজানির পর আতঙ্কে রয়েছেন তরুণীর মা। তাঁর কথায়, ‘আমার মেয়েটার ওরা সর্বনাশ করে দিল। এই মেয়েকে নিয়ে এখন সমাজে মুখ দেখাব কীভাবে!’
মেডিকেলেও এদিন তরুণীকে হেনস্তার শিকার হতে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেখানে উপস্থিত অন্য রোগীরা। পুলিশ এসে মেয়েটির হয়ে সওয়াল করায় বাকি রোগী ও তাঁদের আত্মীয়পরিজনরাও পাশে দাঁড়ান। এক রোগীর আত্মীয় পুলিশের উদ্দেশে বলে ওঠেন, ‘আপনাদেরই যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে আমরা কী পরিষেবা পাই একবার ভাবুন।’