খোকন সাহা, বাগডোগরা: মাটিগাড়া ব্লকের (Matigara) আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েতের তাড়িজোতে একটি পুরোনো জলাভূমি ভরাট করে সেখানে বাড়ি তৈরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হইচই শুরু হয়েছে। এ নিয়ে বাসিন্দারা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ক্ষোভ জানিয়েছেন। প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
এলাকায় হুহু করে জমির দাম বাড়ছে। বালাসন, মহানন্দা নদীর চর বিক্রি করা হচ্ছে। এবারে জলাভূমিও ছাড় পাচ্ছে না। তাড়িজোতের এই দিঘি চৌধুরীদিঘি নামে পরিচিত। সোমবার তাড়িজোতে গিয়ে দেখা গেল প্রায় ১ একর ৮৭ ডেসিমাল আয়তনের দিঘিতে নানা আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হয়েছে। শুখার মরশুম হলেও দিঘির কিছু কিছু জায়গায় এখনও ভালো পরিমাণে জল রয়েছে। সেটি দখল করতে দিঘিতে বাঁশের খুঁটি দেওয়া হয়েছে। দিঘির চারপাশে বেশ কয়েকটি পাকা ঘর তৈরি করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসতেই হইচই শুরু হয়েছে।
বিজেপির আঠারোখাই মণ্ডল সভাপতি সুভাষ ঘোষ বললেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষা আইন অনুযায়ী পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে এভাবে জলাভূমি ভরাট করা যায় না। আইনকে রীতিমতো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই কারবার চলছে। সবার চোখের সামনে সবকিছু চললেও প্রশাসন কেন কিছু করছে না সেটাই আমাদের প্রশ্ন।’ দিঘি দখলের বিষয়টি শাসক শিবিরও মেনে নিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের শংকর দাস বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন
ধরে এই জলাভূমি ভরাটের বিষয়টি দেখছি। এ কাজে একটি দালালচক্র জড়িয়ে রয়েছে।’ এবিষয়ে প্রশাসনের সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে তিনিও দাবি জানিয়েছেন। জলাভূমি ভরাটের বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তবে এই কারবারিদের ভয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি নন। দ্রুত সমস্যা মেটানোর দাবিতে তাঁরা অবশ্য সরব হয়েছেন।
মাটিগাড়ার বিডিও বিশ্বজিৎ দাস বললেন, ‘ওই জলাভূমিটি প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট নাকি কারও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন তা আমার জানা নেই। ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক এই বিষয়টি বলতে পারবেন। তবে সেটি যদি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন হয়েও থাকে তবে এভাবে জলাভূমি ভরাট করা যায় না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ বিষয়টি নিয়ে মাটিগাড়া ব্লকের ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক ক্লেমেন্ট ভুটিয়াকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সাড়া না দেওয়ায় তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।