মাথাভাঙ্গা: মাথাভাঙ্গায় এবার দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজ। এটি সমগ্র বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত কাঠামো। সবচেয়ে বড় কথা সারা দুনিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিস্ময় হিসেবে লন্ডনের এই আইকনটিকে বিবেচনা করা হয়। ১৮৯৪ সালে তৈরি এই টাওয়ার সেতু যে কারণে বিখ্যাত তা অনেকেই জানেন। টেমস নদীতে জাহাজ চলাচলের প্রয়োজনে সেতুর মাঝখান থেকে রাস্তা দু’ভাগ হয়ে দু’দিকে উপরে উঠে যায়। সেতুটি প্রতি বছর প্রায় ৮৫০ বার উঁচু করা হয়।
লন্ডনের টাওয়ার ব্রিজের আদলে এবার দুর্গাপুজোর মণ্ডপ গড়ছে মাথাভাঙ্গার দীনবন্ধুপল্লি সান সাইনিং ক্লাব। এই ক্লাবের পুজো মহিলারা পরিচালনা করেন। এবার ত্রয়োদশ বর্ষে তৈরি হচ্ছে এক স্বপ্নময় মণ্ডপ। যেখানে দাঁড়িয়ে দর্শনার্থীরা হঠাৎই টাওয়ার ব্রিজের পাড়ে চলে যাবেন। ৮০ ফুট উঁচু এই মণ্ডপে শুধু টাওয়ার ব্রিজের প্রতিরূপই নয়, বরং সেখানে দেখা যাবে নদীর বুকে ভেসে চলা জাহাজ এবং সেতুর অংশ ওপরে উঠে যাওয়ার দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য।
পুজো কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মিলি সাহা ও প্রিয়াংকা বসাক (সাহা) জানান, আমরা চাই শহরবাসীকে লন্ডনের এক টুকরো স্বপ্ন উপহার দিতে। প্রায় ১১ লক্ষ টাকার বাজেটে গুজরাট থেকে আনা থ্রিডি এফেক্টের কাপড়ে তৈরি হচ্ছে এই অভিনব মণ্ডপ। কাজের দায়িত্বে রয়েছেন শহরের কৃতী মণ্ডপশিল্পী রাকেশ সাহা। আলোকসজ্জায় জাদু ছড়াবেন প্রসেনজিৎ ভৌমিক। তাঁর মতে, ‘স্পটলাইটের মাধ্যমে মণ্ডপে এমন এক আবহ তৈরি হবে, যা মনে হবে সত্যিই টাওয়ার ব্রিজের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।’
শুধু মণ্ডপ নয়, প্রতিমাতেও থাকছে চমক। মাথাভাঙ্গার পঞ্চানন মোড়ের শিল্পী বিধান পাল গড়ছেন নটরাজ ভঙ্গিমার আদলে দুর্গা প্রতিমা। প্রতিমার ভঙ্গিমা যেমন অনন্য, তেমনই শৈল্পিক ছোঁয়ায় ভক্তদের মুগ্ধ করবে। মিঠু সাহা, কমিটির অন্যতম যুগ্ম সভাপতি জানালেন, আমাদের পুজো মহিলাদের নেতৃত্বে হলেও পুরুষরা সমানভাবে যুক্ত। এবছর চতুর্থীতেই পুজোমণ্ডপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। দর্শনার্থীদের আমরা আগেভাগেই স্বাগত জানাতে চাই।
গত কয়েক বছর ধরেই দীনবন্ধুপল্লির এই পুজো শহরে দর্শক টানার তালিকায় অন্যতম। এবছর টাওয়ার ব্রিজ থিম, থ্রিডি কারুকাজ, আধুনিক আলোকসজ্জা ও অভিনব প্রতিমা সব মিলিয়ে নিঃসন্দেহে মাথাভাঙ্গার দুর্গোৎসবের প্রধান আকর্ষণ হতে চলেছে।