উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি এক অভিনব কূটনীতির সূচনা করেছেন, যার নাম ‘আম কূটনীতি’! কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল যে, তাঁরা ঢাকার সঙ্গে ‘অনুকূল’ পরিবেশে সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। ঠিক সেই আবহেই ঢাকা থেকে উড়ে এলো ১০০০ কিলোগ্রাম বিখ্যাত ‘হাঁড়িভাঙা’ আমের ‘ঝুড়ি’। এই ‘গুডউইল জেস্টার’ বা সদিচ্ছার প্রতীক হিসেবে পাঠানো আমগুলো আজই পৌঁছানোর কথা দিল্লিতে, এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ হাই কমিশনের এক কর্মকর্তা।
তবে, এই ‘আম কূটনীতি’র ফলের ঝুড়ি শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্যই নয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার জন্যও পাঠানো হয়েছে। যদিও আম পাঠানোর এই প্রথা পূর্ববর্তী সরকারগুলোর সময় থেকেই চলে আসছে। তবে গত বছর ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ঢাকা ও নয়াদিল্লির সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ইউনূসের শেষ সাক্ষাৎ হয়েছিল এপ্রিলে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সেটি ছিল মোদি-ইউনূসের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের প্রতি ভারতের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন সেই বৈঠকে।
এরপরেও বাংলাদেশের নতুন সরকার চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ক’ গড়তে শুরু করে যা আঞ্চলিক অস্থিরতা বাড়িয়ে তোলে। প্রসঙ্গত, বেজিং বহু বছর ধরেই ভারতীয় উপমহাদেশে তার প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। অস্ত্র চুক্তি এবং ঋণের মাধ্যমে চিন পাকিস্তান ও বাংলাদেশে তার প্রভাব বিস্তার করছে। এই কূটনৈতিক অস্থিরতার আবহে, বাংলাদেশের এই ‘আম কূটনীতি’-কে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর করার একটি পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।