বোলপুর: একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ভাষা আন্দোলন শুরু করতে চান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্মভূমি থেকে। সেই কথা রাখতেই রবিবার সন্ধ্যায় বোলপুরে পা রাখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাঙাবিতানে তিনি রাত্রিবাস করবেন। এদিন রাতেই সেখানে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, অনুব্রত মণ্ডল, কাজল শেখ প্রমূখ।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ বোলপুরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে রিভিউ মিটিং হওয়ার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, অন্যান্য দপ্তরের বিভাগীয় সচিব, ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী, জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ, জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্তা, জেলার সাংসদ, বিধায়ক, রাজ্য বিধান সভার ডেপুটি স্পীকার আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। বীরভূম সফরে সোম ও মঙ্গলবার ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। বীরভূম জেলা থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু করতে চলছে তৃণমূল। রাজ্যে রাজ্যে বাঙালি হেনস্তার প্রতিবাদে এই ভাষা আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েছেন মমতা।
ওডিশা থেকে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর অত্যাচার চলছে। নিত্যদিন বাঙালিদের হেনস্তার খবর সামনে এসেছে। এই আবহে, ২৭ জুলাই থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু করল তৃণমূল। সপ্তাহের প্রতি শনি ও রবিবার বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবিতে পথে নামতে চলেছে তৃণমূল।
সোমবার বোলপুরে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। দুপুর ১২ টায় গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। কর্মশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী সহ সরকারি প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন। বিকেলে যোগ দেবেন ভাষা আন্দোলনের মিছিলে। ট্যুরিস্ট লজ মোড় থেকে জামবুনি মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার মিছিল হবে। জামবনি মোড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তিতে মাল্যদান করে অস্থায়ী মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৬-এর নির্বাচনে বিজেপিকে পর্যুদস্ত করতে নেত্রী কী বার্তা দেন, তার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দলের নেতা, কর্মীরা। মঙ্গলবার বীরভূম থেকে কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তার আগে ইলামবাজারে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি। জেলাশাসক বিধান রায় জানান, মঙ্গলবার ইলামবাজারের মিলের মাঠে মোট ৬৫০ কোটি টাকার ৪০০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরমধ্যে রয়েছে, সেতু, রাস্তা, পানীয় জল, সোলার পাম্প, সেচ প্রকল্প, সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র, অতিরিক্ত শ্রেণী কক্ষ, সাংস্কৃতিক মঞ্চ, মিড-ডে মিলের সেড। এর মধ্যে শুধুমাত্র সেতুর জন্য বরাদ্দ ১১৩ কোটি। এছাড়াও প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ২০০টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে রাস্তা, সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র, কবর স্থানের প্রাচীর, অতিরিক্ত শ্রেণী কক্ষ, শ্বেত প্রকল্প, জল জীবন মিশন, কমিউনিটি সোলার গ্রিড, স্ট্রিট লাইট এবং সৌন্দর্যায়ন।