অরিন্দম বাগ, মালদা: মশার কামড় খেয়ে সারাটা রাত কাটাতে হয়েছে বাসেই। গ্লাসে জল নিয়ে সকালে ছুটতে হয়েছে শৌচালয়ে। কোথাও পর্যাপ্ত ম্যাট্রেস না থাকার অভিযোগ, কোথাও আবার চেঞ্জিং রুম না থাকা নিয়ে ক্ষোভ। খেলা সামলানোর পাশাপাশি পরিকাঠামো ঠিক করতে হয়েছে ম্যাচ অফিশিয়ালদের। নবম রাজ্য গেমসের প্রথমদিনে এমনই ছবি ধরা পড়েছে মালদায়।
রবিবার সন্ধেয় মালদা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ময়দানে গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন মাঠে খেলা শুরু হয়। আর এদিন সকাল থেকেই খেলার আয়োজন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
ব্যবস্থাপনা দেখে হকিকে তাচ্ছিল্য করার অভিযোগ তুলেছেন বেঙ্গল হকি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মহম্মদ খালিদ হোসেন। তিনি জানান, ‘এত বড় খেলার আয়োজনে প্রতি মুহূর্তে পরিকাঠামোর অভাব টের পাওয়া যাচ্ছে। খেলোয়াড়দের যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে নানা সমস্যা। রাত থেকে অনেক অভিযোগ এসেছে, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। মাঠে খেলোয়াড়দের রোদের মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে। খেলতে গিয়ে একটি মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। কিন্তু ওই খেলোয়াড়কে তুলে আনার জন্য কোনও স্ট্রেচারের ব্যবস্থা নেই। মাঠে চেঞ্জিং রুম নেই। বায়ো টয়লেট করার কথা থাকলেও তা হয়নি। অনেক বলার পর গ্যালারির পেছনে একটা গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’
মেদিনীপুরের টিমের হয়রানির কথাও উত্তরবঙ্গ সংবাদকে জানিয়েছেন খালিদ। তাঁর কথায়, ‘রাত দুটো নাগাদ মেদিনীপুরের টিম এসে পৌঁছায়। দলের কর্তাদের থেকে তিনি ফোনে জানতে পারেন, তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়নি। মশার উপদ্রবের মধ্যে তাঁরা বাসেই বসে রয়েছেন। ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সেভাবেই থাকতে হয়েছে খেলোয়াড়দের। ওই পরিস্থিতি সামলে সকাল এগারোটায় মাঠে নামতে হয়েছে খেলোয়াড়দের। এভাবে কী খেলোয়াড়রা খেলতে পারেন?’
এদিকে, শৌচালয়ে জল না থাকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ার মহিলা হকি দলের কোচ মিলন বর্মন। তিনি বলেন, ‘বার্লো গার্লস হাইস্কুলে আমাদের থাকতে দেওয়া হয়েছে। সকাল সাতটায় আমাদের মেয়েদের খেলা ছিল। সকালে দেখি মেয়েরা গ্লাসে করে জল নিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, মেয়েরা ওভাবে শৌচালয়ে জল নিয়ে যাচ্ছে। ভোর পাঁচটা নাগাদ কোঅর্ডিনেটরকে ফোন করি। উনি বিষয়টি দেখে নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু তারপরেও সমস্যা মেটেনি। মালদার দলেরও একই সমস্যা হয়েছিল। ওয়াকওভার এড়াতে ওনারা আমাদের সময়মতো টিম না নিয়ে যেতে অনুরোধ করেছেন। এক কথায় আমরা চরম অব্যবস্থার শিকার হয়েছি।’