হরষিত সিংহ, মালদা: বিদেশের বাজারে চাহিদা বাড়ছে মালদার ‘ফজলি’ আমের। মাঝে রপ্তানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফজলির। ইতিমধ্যে মালদার এই বিখ্যাত প্রজাতির আম পেয়েছে জিআই ট্যাগ। এই বছর আধুনিক পদ্ধতিতে ভালো মানের আম চাষ হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এতেই হঠাৎ করে বিদেশে চাহিদা বেড়েছে ফজলির। সরকারি উদ্যোগে এবার ফজলি আম পাঠানো হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে এই বছর ফজলি যাচ্ছে লন্ডনে।
মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের অমৃতির আমচাষি অনুপপ্রসাদ সাউয়ের বাগান থেকে ফজলি আম পাঠানো হচ্ছে লন্ডন। কলকাতার এক রপ্তানিকারকের মাধ্যমে লন্ডন যাবে আম। প্রথম ধাপে এক কুইন্টাল আম পাঠানো হয়েছে। আরও তিন কুইন্টাল আম পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অনুপ বলেন, ‘এই বছর ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করে আম চাষ করেছি। আমের গুণগত মান ভালো হয়েছে।’
জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের সহযোগিতায় এই বছর ফজলি ও বৃন্দাবনি আশিনা প্রজাতির আম সংযুক্ত আরব আমিরশািহতে পাঠানো হয়েছে। গত কয়েক বছর অন্য প্রজাতির আম রপ্তানি হলেও ফজলি আম রপ্তানি হয়নি। জেলা উদ্যান পালন দপ্তরের আধিকারিক সামন্ত লায়েকের কথায়, ‘বিগত কয়েক বছর ফজলি আম রপ্তানি হয়নি। এই বছর ফজলি ও বৃন্দাবনি আশিনা প্রজাতির আম রপ্তানি হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে আগামীতে আরও বেশি চাহিদা বাড়বে এই আমের।’
চলতি বছরে মালদা জেলার বিভিন্ন প্রজাতির আম রপ্তানি হয়েছে। জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত আনুমানিক ১০ মেট্রিক টন আম বিদেশে পাঠানো হয়েছে। অন্য প্রজাতির আমগুলি সুইৎজারল্যান্ড, ভুটান, সুইডেন ও নেদারল্যান্ডে গিয়েছে। ফজলি আম পাকতে শুরু করতেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহি ও লন্ডনে পাঠানো হচ্ছে। এতদিন ফজলি আম তেমনভাবে রপ্তানি হয়নি। এই বছর জেলার কিছু কৃষক উন্নত প্রযুক্তি ও ফ্রুট ব্যাগ ব্যবহার করে আম চাষ করেছিলেন। এতে করে আমের গুণগত মান বেড়েছে। পাশাপাশি দেখতেও সুন্দর হয়েছে আমগুলি। তার জেরেই এর চাহিদা বিদেশে বাড়ছে বলে দাবি করেছেন আমচািষরা।
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি উজ্জ্বল সাহার বক্তব্য, ‘ফজলি আম জিআই পেয়েছে আগেই। এ বছর ব্যাপক হারে মালদার ফজলি রপ্তানি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উদ্যান পালন দপ্তরের সহযোগিতায় সম্ভব হচ্ছে।’
এবছর ফজলি আমের চাহিদা বিদেশের বাজারে বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী বছর এই প্রজাতির আম আরও বেশি করে যেন রপ্তানি করা যায়, তা এখন থেকে পরিকল্পনা করছেন জেলার কৃষকদের একাংশ। অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও ফ্রুট ব্যাগের ব্যবহার আরও বেশি করে করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন অনেকেই।