সুশান্ত ঘোষ, মালবাজার: মালিকপক্ষের অভ্যন্তরীণ বিবাদ এবং বাসের শিডিউল সংক্রান্ত সমস্যা ঘিরে বৃহস্পতিবার দিনভর শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্স রুটের বাস পরিষেবা বন্ধ থাকে। শুক্রবার বিকেলে পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিষেবা পুনরায় চালু হয়। তবে শিডিউল সংক্রান্ত সমস্যা সাময়িক মিটলেও জট পুরোপুরি কাটেনি এখনও।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও অভিযোগ পালটা অভিযোগে সরগরম মালিকপক্ষরা। বৃহস্পতিবার রতন ও সুরেশ যাদবের উপর অভিযোগ ওঠে, শিলিগুড়ির একটি বাসকে তাঁরা মাল বাসস্ট্যান্ডে আটকে রেখেছেন (Malbazar)। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার দিনভর শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্সগামী বাস পরিষেবা বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে মালিকপক্ষের তরফে রতন যাদব এবং সুরেশ যাদবের নামে মাল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিষেবা চালু হয়। এর পালটা হিসেবে শুক্রবার সকালে রতন ও সুরেশ মেল মারফত শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় শিলিগুড়ি বাস মালিক বিপ্লব বিশ্বাস ও গৌতম সাহার নামে গাড়ি আটকে রাখার অভিযোগ তোলেন। শিলিগুড়ির বাস মালিক বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘অভিযোগটাই ভিত্তিহীন। আমরা বাস আটকাইনি। মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’ রতনের পালটা, ‘অভিযোগ যদি ভিত্তিহীন হয়ে থাকে তাহলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক, আমরা পুলিশকে এটাই জানিয়েছি। পুলিশের তরফে আমাদের ভক্তিনগর থানায় ডাকা হয়েছে।’ পরে ভক্তিনগর থানায় একটি বৈঠকের পর রতনের বাস ছেড়ে দেওয়া হয়।
কয়েক মাস আগেও সুরেশ যাদব ও রতন যাদবদের সঙ্গে শিডিউল নিয়ে জয়গাঁর বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গেও সমস্যা হয়েছিল। রতন ও সুরেশ যাদব পরবর্তীতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এখন অবশ্য দু’পক্ষেরই দাবি, সমস্যা মিটে গিয়েছে। জয়গাঁ বাস মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রতন চাকলাদার বলেন, ‘বিগত দিনের সমস্যা বর্তমানে নেই, রতন যাদবদের গাড়ি আরটিও নিয়ম অনুসারে আমাদের অঞ্চলে পরিষেবা দিচ্ছে।’
এদিকে শুক্রবার শিলিগুড়ির মালিকপক্ষের তরফে গৌতম সাহা বলেন, ‘এরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শিলিগুড়ি থেকে গাড়ি ছাড়ার ৫.৪০-এর টাইম চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই সময় আমাদের এক ফাউন্ডার মেম্বারের গাড়ির সময় থাকায় তাকে সেই টাইম দেওয়া হয় না। পরবর্তীতে নিজে থেকেই দুই মিনিট ব্যবধানে ৫.৪২-এ সময় নির্ধারণ করেন।’
গৌতমের সংযোজন, ‘রতন ও সুরেশরা নিজের ইচ্ছেমতো সময় চেয়ে যাচ্ছেন। এখন আবার তাঁরা বলছেন আটটা বেজে ২০ মিনিটের সময়টি দেওয়া হোক। কিন্তু সেই সময় আমাদের এক পুরোনো সদস্যের বাস আছে এই রুটে। বর্তমানে তিনি অসুস্থ বলে সেই বাসটি বন্ধ। সেই বাসটিকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে রতন, সুরেশের মনগড়া সময় আমরা মানতে পারব না।’
শিলিগুড়ি বাস মালিকপক্ষের বিপ্লব বিশ্বাসের কথায়, ‘রাত পৌনে আটটায় গাড়ি ছাড়া যাবে না শিলিগুড়ি থেকে। সেটা আরটিও রুট অনুযায়ী অনুমতির বাইরে।’ এতকিছুর মাঝে জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক এসটি লেপচা বলেন, ‘রতন এবং সুরেশ যাদবদের আরটিও-র নিয়ম মেনেই চলতে হবে।’ আপাতত পুরোনো সময়েই তাঁরা গাড়ি চালাবেন বলে জানা গিয়েছে।