সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: গভীর রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লাটাগুড়ি বেড়াতে গিয়ে এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে তা কোনওদিনই ভাবতে পারেননি পেশায় ব্যাংককর্মী রাজু রায়। ময়নাগুড়ির বৌলবাড়ির এটিএম লুট কাণ্ডে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের পিছনে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে রাজু এবং তাঁর পরিবারের। সোমবার জলপাইগুড়ি পুলিশ লাইনে রাজু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের পুলিশকে সাহায্য করার জন্য সংবর্ধিত করা হল। এদিন জেলা পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত ওই রাতের ঘটনার জন্য রাজু রায় এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফুল এবং স্মারক প্রদান করে সংবর্ধিত করেন।
রাজু কীভাবে এটিএম লুটের দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে সাহায্য করলেন পুলিশকে? চলতি মাসের ১৩ তারিখ রাতে পরিবার নিয়ে জলপাইগুড়ি থেকে লাটাগুড়ি যাচ্ছিলেন পেশায় ব্যাংককর্মী রাজু। সেই সময় বৌলবাড়ি এলাকায় তাঁর নজরে আসে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের এটিএমের ভেতর কিছু হচ্ছে। সন্দেহ হওয়ায় রাজু দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে আনেন। ততক্ষণে এটিএম থেকে বেরিয়ে দুষ্কৃতীরা তাদের গাড়ি নিয়ে রওনা দিয়েছে (Mainaguri ATM Theft)। রাজু নিজে একজন ব্যাংককর্মী হওয়ায় বুঝতে পারেন এটিএম লুট সংক্রান্ত কিছু হয়েছে। এরপরেই দুষ্কৃতীদের গাড়ির পিছু নেন রাজু। গাড়িতে থাকা স্ত্রী এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা দুষ্কৃতীদের গাড়ির ভিডিও করতে থাকেন নিজেদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায়। সেইসঙ্গে নিয়মিত বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। গোশালা মোড় পর্যন্ত পিছু নেওয়ার পর দুষ্কৃতীদের গাড়িটি রংধামালির দিকে চলে যায়। ততক্ষণে রাজুর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় নাকা চেকিং শুরু করে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে মোট চারজন দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং এটিএম থেকে চুরি যাওয়া বেশকিছু টাকাও উদ্ধার করে। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘সেদিন রাতে দুষ্কৃতীদের পিছু নিয়ে পুলিশকে সাহায্য করার জন্য আমরা রাজু রায় এবং তাঁর পরিবারকে সংবর্ধিত করেছি। সেইসঙ্গে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে যে পুলিশের টিম কাজ করেছে, তাদের প্রত্যেককে আমরা সংবর্ধিত করেছি।’ এদিন পুলিশের থেকে সংবর্ধনা পেয়ে খুশি রাজু এবং তাঁর পরিবার। রাজু বলেন, ‘ওই দিনে রাতের ঘটনা আমাদের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দুষ্কৃতীদের ধরতে পুলিশকে সাহায্য করতে পেরে আমরাও খুশি।’