Mainaguri | শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে কৃষিতে পথপ্রদর্শক দীনবন্ধ

Mainaguri | শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে কৃষিতে পথপ্রদর্শক দীনবন্ধ

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


শুভদীপ শর্মা, ময়নাগুড়ি: বিএ, বিএলআইআইএস (ব্যাচেলর অফ লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স) পাশ করেও কৃষিকাজকেই বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। বাদ সাধতে পারেনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও। নিজের উদ্যোগেই গ্রামের কৃষকদের সহযোগিতার জন্য গড়ে তুলেছেন ফার্মার্স ক্লাব। বর্তমানে সেই ক্লাবের সদস্য সংখ্যা পাঁচশোর ওপর। ময়নাগুড়ির (Mainaguri) উত্তর মৌয়ামারি গ্রামের তরুণ দীনবন্ধু রায় সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে দূরে সরিয়েই আজ সফল কৃষক।

কৃষক দম্পতি মহেশ রায় ও দিনবালা রায়ের চার মেয়ে দুই ছেলের সংসারে ছোট ছেলে দীনবন্ধু। দীনবন্ধুর বয়স যখন আট বছর তখন টাইফয়েড হয়েছিল। সুস্থ হওয়ার পরে হাঁটার ক্ষমতা হারান দীনবন্ধু। কিন্তু সেই দুর্বলতা কোনওদিন বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি দীনবন্ধুর জীবনে। ২০০৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার পর চাষাবাদে মন দেন কৃষক ঘরের এই সন্তান। সঙ্গে চলে পড়াশোনা। দীনবন্ধু বলেন, ‘প্রতিবছর গ্রামের কৃষকরা চাষাবাদ করে লাভের মুখ দেখতে পারতেন না। তাই চিন্তা শুরু করি বিজ্ঞানসম্মতভাবে চাষাবাদ করে যাতে কৃষকরা লাভবান হয় সেই চেষ্টা করার।’ যা চিন্তা তাই কাজ। ময়নাগুড়ি ব্লকে থাকা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে তখন থেকে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করেন দীনবন্ধু। বিজ্ঞানসম্মত চাষাবাদের নানা বিষয়ে সেখান থেকেই শিক্ষা নিয়ে গ্রামে গড়ে তোলেন ফার্মার্স ক্লাব। সঙ্গে চলে পড়াশোনার পালা। একে একে  বর্তমানে সেই ফার্মার্স ক্লাবের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। বিএ, পাশ করার পর বিএলআইআইএস ডিগ্রিও নেন তিনি। ফার্মার্স ক্লাবের মাধ্যমেই কৃষকদের অত্যাধুনিক চাষাবাদে কীটনাশকের কতখানি প্রয়োগ সমস্ত কিছুই জানান দেন দীনবন্ধু। পাশাপাশি সরকারি কী কী সুযোগসুবিধা পেতে পারেন চাষিরা, কোথায় ধান বিক্রি হবে- সবকিছুরই খোঁজ এনে দেন দীনবন্ধু। ফার্মার্স ক্লাবের সদস্য খগেশ্বর রায়, সৌমিত্র রায়, রঞ্জিত শীল, শংকর রায় প্রমুখ জানান, উন্নত কৃষিকাজ করে কী করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যায় সেই শিক্ষা দীনবন্ধুর কাছ থেকে মিলেছে বারবার। এছাড়াও কোথা থেকে ফসলের বীজ, বিমার সুবিধা মিলবে সবকিছুই খোঁজ মেলে দীনবন্ধুর কাছে। দীনবন্ধু জানান, অন্যকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি নিজের জমিতে হরেক রকম ফসলের চাষাবাদ করেন তিনি। আশপাশের বিভিন্ন গ্রামগঞ্জেও তাঁদের ক্লাবের সদস্য রয়েছেন। নিয়মিত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নিজের মোটর সাইকেল ব্যবহার করেন দীনবন্ধু। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনা করে কোনওদিন চাকরির চেষ্টা করিনি। আগামীদিনে এই কৃষিকাজকে সামনে রেখেই জীবনে আরও প্রতিষ্ঠিত হতে চাই।’ কোনওদিন কৃষিকাজ করে যাতে কোনও কৃষককে ক্ষতির মুখে পড়তে না হয় সে চেষ্টাই তাঁর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য বলে জানান দীনবন্ধু।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *