Mainaguri | ডাক্তার নেই, বার্নিশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী দেখছেন ফার্মাসিস্ট

Mainaguri | ডাক্তার নেই, বার্নিশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী দেখছেন ফার্মাসিস্ট

খেলাধুলা/SPORTS
Spread the love


অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: ‘যে কোনও ভূমিকায় সমানে লড়ে যাই, আপনি যা চান আমি ঠিক তাই।’

পাতালঘর ছবির জনপ্রিয় গানের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে ময়নাগুড়ি (Mainaguri) ব্লকের বার্নিশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বর্তমান পরিস্থিতি। ডাক্তার নেই, রোগী দেখছেন ফার্মাসিস্ট। গানের কথায় ছিল অভিনেতার জীবন। পেশাগত চাহিদায় তাঁকে যে কোনও ভূমিকায় অভিনয় করতে হত। অনেকে কথায় কথায় বলেন, জুতোসেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পারি। অর্থাৎ, সব কাজেই যিনি পারদর্শী। তাই বলে একজন ডাক্তারের কাজ কি ফার্মাসিস্টকে দিয়ে সম্ভব?

জুলাই মাসের শেষ দিন বার্নিশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার অবসর নেন। তারপর থেকে ডাক্তার নেই। শুক্রবার প্রায় শতাধিক মানুষ চিকিৎসার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফার্মাসিস্ট রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন লিখছেন। ওষুধও দিচ্ছেন। অনেক রোগী আবার জানেনই না যে ওই ব্যক্তি ডাক্তার নয়, ফার্মাসিস্ট। তাঁরা ডাক্তার ভেবেই তাঁকে সমস্ত শারীরিক অসুবিধার কথা খুলে বলছেন। উপযুক্ত ডিগ্রি বা প্রশিক্ষণ  ছাড়াই একজন ফার্মাসিস্ট কীভাবে রোগী দেখছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ফার্মাসিস্ট কমল দাস অবশ্য বললেন, ‘প্রতিদিন প্রচুর রোগী আসেন। তাঁদের তো আর ফিরিয়ে দিতে পারি না। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে কাজ করছি। তাই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জ্বর, সর্দিকাশির সমস্যা নিয়ে যাঁরা আসছেন তাঁদের ওষুধ দিচ্ছি। যাঁদের সমস্যা গুরুতর তাঁদের ময়নাগুড়ি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’

সমস্যার কথা স্বীকার করে ময়নাগুড়ির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সীতেশ বর বলেন, ‘ময়নাগুড়ি ব্লকে চিকিৎসক সংখ্যা অপ্রতুল। পার্শ্ববর্তী ভুরুঙ্গেরবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এক ডাক্তারকে নাইট ডিউটি করে ফেরার পথে সপ্তাহে তিনদিন বার্নিশ প্রথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা দেবার কথা বলা হয়েছে। পরিষেবা চালু রাখতেই ওই ফার্মাসিস্ট হয়তো ওষুধ দিয়েছেন।’ বিষয়টি ব্লক স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

১৯৯১ সালের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর নিয়ম অনুসারে ময়নাগুড়ি ব্লকে কম ডাক্তার রয়েছেন। ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে মোট ১৫ জন ডাক্তার প্রয়োজন। সেখানে ডাক্তার রয়েছেন ১১ জন। বার্নিশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন ২ জন নার্স, একজন করে ফার্মাসিস্ট ও গ্রুপ-ডি কর্মী রয়েছেন। গত কয়েক দশকে ময়নাগুড়ি ব্লকের জনসংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সুষ্ঠুভাবে পরিষেবা চালিয়ে যেতে দ্রুত ডাক্তার নিয়োগের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বার্নিশ হাসপাতালে জ্বর নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা এক রোগীর কথায়, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢোকার পর একজন সমস্যার কথা শুনে প্রেসক্রিপশন লিখে দিলেন। কীভাবে বুঝব উনি চিকিৎসক নন!’ আরেক রোগীর পরিজন অমল রায় বলেন, ‘গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। একজন ফার্মাসিস্ট সমস্যার কথা শুনে ওষুধ দিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে আমাদের পরিষেবা নিতে হচ্ছে।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *