Mahananda river | হারিয়ে গিয়েছে নদীয়ালি মাছ, বিপদে মৎস্যজীবীরা, মহানন্দার দূষণে বাড়ছে উদ্বেগ

Mahananda river | হারিয়ে গিয়েছে নদীয়ালি মাছ, বিপদে মৎস্যজীবীরা, মহানন্দার দূষণে বাড়ছে উদ্বেগ

শিক্ষা
Spread the love


কল্লোল মজুমদার, মালদা: মালদা শহরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে বয়ে গিয়েছে মহানন্দা নদী। কিছুদিন আগেও শুকনো খটখটে ছিল। তবে পাহাড়ে বৃষ্টি হতেই অল্পস্বল্প জল বাড়তে শুরু করেছে। আর সেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা। কিন্তু কোথায় মাছ? দূষণের জেরে এমনিতেই যায় যায় অবস্থা ছিল মহানন্দার। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো নতুন পথ ধরে মহানন্দায় এসে পড়ছে দূষিত জল। ক্রমেই ফেনায় ভরে উঠছে নদী। যা নিয়ে আতঙ্কিত পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁরা বলছেন, প্রশাসনের অজ্ঞতায় প্রতিদিন একটু একটু করে দূষিত হচ্ছে মহানন্দা। হারিয়ে যাচ্ছে নদীয়ালি মাছ।

২০১৭ সালের সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, একটা সময় মহানন্দা নদীতে প্রচুর পরিমাণে বেলে, চাঁদা, লালচাঁদা, পাবদা, বোয়াল, বাসত, ঘেরে, বাঁচা, রাম ট্যাংরা, পাতি ট্যাংরা, গুচি ট্যাংরা, বাঘর, কুকরি, বড় পুঁটি, তিত পুঁটি, কালবোস, মোয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রকম সুস্বাদু মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু এখন কিছু তেলাপিয়া, কোনও কোনও সময় পুঁটি বা অন্য মাছের মাঝে মাঝে দেখা পাওয়া যায়। তবে গুণমানে তা পাতে দেওয়ার মতো নয়।

নতুন করে মহানন্দায় দূষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আতঙ্কিত মালদার পরিবেশপ্রেমীরা। পরিবেশপ্রেমী সব্যসাচী মজুমদারের দাবি, ‘নতুন করে মহানন্দায় দূষণ ছড়াচ্ছে। মালদা শহরে নীচু এলাকার বৃষ্টির জল বের করে সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এটা ভালো উদ্যোগ। কিন্তু, আমরা দাবি করছি, সেই জল নদীতে ফেলার আগে পরিশোধনের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে আরও সংকট বাড়বে।’

বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক মনোরঞ্জন দাস বলেন, ‘এক সময় শহরে পঞ্চাশটির উপর ছোট-বড় জলাশয় ছিল। কিন্তু, সংস্কারের অভাবে অধিকাংশই মৃতপ্রায়। শহরের বাড়তি জল বের হওয়ার  মূল নিকাশি ব্যবস্থা ছিল চাতরা বিল। ওই বিল থেকে ভাতিয়ার বিল হয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার রাস্তা আজ বেদখল। স্বাভাবিকভাবে জলনিকাশি ব্যবস্থা চালু রাখার স্বার্থে বাইপাসের রাস্তায় পুরসভার উদ্যোগে সদ্য তৈরি হওয়া এই বৃহৎ নিকাশিনালা আপাতদৃষ্টিতে প্রশংসনীয় হলেও একজন পরিবেশকর্মী হিসেবে মনে করি এতে নদী আরও দূষিত হবে।’

তাঁর অভিযোগ, ‘শহরের পয়ঃপ্রণালীর দূষিত জল ট্রিটমেন্ট না করে সরাসরি মহানন্দা নদীতে ফেলায় নদী দূষণ যেমন বাড়বে তেমনি ভুগতে হবে জলজ প্রাণী সহ নদীতীরের মানুষকে।’

বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যদের মতে, পয়ঃপ্রণালীর দূষিত জলে থেকে নাইট্রোজেন, ফসফরাস সমৃদ্ধ যৌগ এবং অসংখ্য ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়া, ভাইরাস ও প্রোটোজোয়া নদীতে ছড়িয়ে পড়বে। এছাড়া ওই জলে থাকে ক্ষতিকারক কৃত্রিম জৈব-রাসায়নিক,  মাইক্রোপ্লাস্টিক সহ নানা ধরনের পলিমার, ভারী ধাতু, তেল  ইত্যাদি। অভিযোগ, সদ্য তৈরি হওয়া নিকাশিনালার দূষিত জল নদীতে ফেলার আগে একটা রিজার্ভার তৈরি করে তাতে ট্রিটমেন্ট করে নদীতে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু তা না হওয়ার ফলে এই দূষিত জল নদীর মাছ সহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অস্তিত্ব সংকটে ফেলবে, নির্ভরশীল মৎস্যজীবীরা বিপদে পড়বেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *