উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ৪৫ দিন ধরে প্রয়াগরাজে চলেছে মহাকুম্ভ। মহাকুম্ভে যোগ দিয়ে কোটি কোটি মানুষ পূণ্য অর্জন করেছেন বলে বিশ্বাস। আর এই কুম্ভই জীবন পুরোপুরি বদলে দিয়েছে প্রয়াগরাজের নৈনির বাসিন্দা এক সাধারণ মাঝির। ঘটনাটা প্রথম উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মহাকুম্ভ কী ভাবে মানুষের রোজগারের পথ খুলে দিয়েছে তা বলতে গিয়ে নৌকাচালকদের রোজগারের কথা তুলে ধরেন তিনি। তখনই জানা যায়, মহাকুম্ভের ৪৫ দিন নৌকা চালিয়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকা রোজগার করেছেন নৌকাচালক পিন্টু মাল্লা।
কোনও রকমে টেনেটুনে গ্রাসাচ্ছাদন চলত পিন্টু ও তার পরিবারের। সঙ্গমে নৌকা চালানোই ছিল পেশা। পিন্টুদের বৃহত্তর পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০০। মহাকুম্ভ হবে জেনে সবাই মিলেই কয়েক মাস আগে থেকেই নদীতে আরও নৌকা নামানোর পরিকল্পনা করেন। মায়ের গয়না বন্ধক দিয়ে ১৩০টি নৌকার ব্যবস্থা করেন তিনি। পিন্টুর কথায়, ‘মাকে জানাই ৪৫ দিনে কোটি কোটি লোক আসবে। আমাদের ভবিষ্যৎ বদলে যাবে। তাই গয়না বন্ধক দিকে নৌকা তৈরি করব। আশঙ্কা থেকে প্রথমে রাজি না হলেও পরে মা নিজের গয়না হাতে তুলে দিতে রাজি হন।’ পিন্টুর নিজের পরিবারেরই ছিল ৭০ টি নৌকা। বাকি অন্যদের নৌকাও ভাড়া নিয়ে কাজে লাগান তিনি।
পিন্টু হয়তো ভাবেননি যে এভাবে সাফল্যের মুখ দেখবেন। ১৩ জানুয়ারি মহাকুম্ভের উদ্বোধন হতেই ঝাঁপিয়ে পড়েন পিন্টু ও তাঁর পরিবারের অন্যরা। নৌকায় করে পূণ্যার্থীদের গঙ্গা-যমুনা ও সরস্বতীর সঙ্গমস্থলে নিয়ে যেতেন পূণ্যস্নানের জন্য আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতেন। সরকারের তরফে এর ভাড়া ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল মাথাপিছু ৪৮৩ টাকা। কিন্তু পিন্টুর দাবি, অনেকেই বেশি টাকা দিয়েছিলেন, কেউ ২০০০ কেউ ৫০০০ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। কারও কাছ থেকেই অতিরিক্ত কোনও টাকা দাবি করা হয়নি। এতে প্রতিটি নৌকা পিছু দিনে আয় দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। স্বাভাবিক ভাবেই পিন্টুদের রোজগারও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। ২৬ ফেব্রুয়ারি মহাকুম্ভ শেষ হতে পিন্টুর রোজগার দাঁড়ায় ৩০ কোটি টাকা। পিন্টু জানিয়েছেন, তিনি তার সমস্ত ঋণ শোধ করে মায়ের গয়না ছাড়িয়ে নিয়ে এসেছেন। এখন কীভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করা যায় তা নিয়ে ভাবছেন।