Madarihat | বুনোর দাঁত পাচারে ধৃত দম্পতি

Madarihat | বুনোর দাঁত পাচারে ধৃত দম্পতি

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট : এবার  বন্যপ্রাণীর দেহাংশ পাচারে ধরা পড়ল এক দম্পতি।  তাদের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে হাতির দাঁতের তিনটি টুকরো। যার ওজন দুই কিলোগ্রাম। আর সেইসঙ্গে চারটা চিতাবাঘের দাঁত। এর আগে জলদাপাড়ায় বুনোর দেহাংশ পাচারে কোনও ভারতীয় মহিলা ধরা পড়েছিলেন কি না, তা বলতে পারেননি জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বিভাগীয় বনাধিকারিক পারভিন কাশোয়ান। বলতে পারছেন না পোড়খাওয়া বনকর্তারাও।

বিভাগীয় বনাধিকারিক জানিয়েছেন, যে দুজন ধরা পড়েছে তাঁদের নাম পরিমলচন্দ্র দে ও দেবযানী রায় দে। তাঁদের বাড়ি কোচবিহার জেলার কোতোয়ালি থানার ঝিনাইডাঙ্গায়। পেশায় নিজেকে ফিজিওথেরাপিস্ট বলে পরিচয় দিতেন ওই মহিলা। আর পরিমল পেশায় ছিলেন বাসের কনডাক্টর।

বুধবার সকালে একটি ছোট চারচাকার গাড়িতে ওই দাঁতগুলি নিয়ে তাঁরা আলিপুরদুয়ারের দিক থেকে শিলিগুড়ির অভিমুখে আসছিলেন। গাড়ি চালাচ্ছিলেন পরিমল। তবে তাঁদের গন্তব্যস্থল কোথায় ছিল, তা জানতে পারেননি বনকর্তারা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জাতীয় সড়কের ধারে অপেক্ষা করছিলেন অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল স্বর্ণদীপ্ত রক্ষিত সহ বনকর্মীরা। পরিমলদের গাড়িটি সেখানে আসতেই তাঁরা পিছুধাওয়া করে গাড়িটি থামান। তল্লাশি চালাতেই গাড়ির ভেতর পাওয়া যায় হাতির দাঁতের তিনটি বড় টুকরো ও চিতাবাঘের চারটি দাঁত।

এই ঘটনায় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠছে। প্রথমত, পরিমলদের কাছে ওই বন্যপ্রাণীর দেহাংশগুলি এল কোথা থেকে? দ্বিতীয়ত, তাঁরা সেগুলি কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন? সেগুলি কি কারও কাছে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল? তৃতীয়ত, পরিমলরা কি বুনোর দেহাংশ কেনাবেচায় জড়িত? নাকি কেবল বাহক? চতুর্থত, এই কাজে দেবযানীর ভূমিকাই বা কী? এসব প্রশ্নের কোনও জবাব মিলছে না। তদন্তের স্বার্থে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বনকর্তারাও। বিভাগীয় বনাধিকারিক জানিয়েছেন, এঁদের সঙ্গে কোনও আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের যোগাযোগ আছে কি না এবং কোথা থেকে এগুলি পেয়েছেন সেসব রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানা যাবে।

বন দপ্তর সূত্রে খবর, পরিমল আগে বাসের কনডাক্টর ছিলেন। এর আগে আগ্নেয়াস্ত্র কাণ্ডে দু’বার জেল খেটেছেন। তাঁর স্ত্রী দেবযানী নিজেকে ফিজিওথেরাপিস্ট বলে পরিচয় দিলেও আদৌ তিনি এই কাজ করতেন কি না তা স্পষ্ট নয়।  ডাউয়াগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝিনাইডাঙ্গা গ্রামের হরি মন্দির এলাকায় বাড়ি পরিমলদের। দেবযানীর বাবার বাড়ি ফালাকাটায়। আগে কনডাক্টর হিসেবে কাজ করলেও সম্প্রতি পরিমল এই ছোট গাড়িটি কিনে নিজেই চালাতেন। তাঁর স্ত্রী ফিজিওথেরাপিস্টের কাজে বিভিন্ন রোগীর বাড়িতে যেতেন। তবে ভেতরে যে এই কারবারে জড়িত ছিলেন, ওই গ্রামের কেউ বুঝতেই পারেনি।

এদিকে, বন্যপ্রাণীদের দেহাংশ পাচারের ঘটনায় একজন ভারতীয় মহিলা ধরা পড়ার ঘটনায় চিন্তিত বনকর্তারা। চোরাকারবারিরা এবার মহিলাদের ব্যবহার করছে বলে মনে করছেন তাঁরা। আগে কখনও জলদাপাড়ায় এমন ঘটনায় কোনও ভারতীয় মহিলা ধরা পড়েছিলেন বলে জানাতে পারেননি অবসরপ্রাপ্ত বনকর্তারাও। তবে অবসরপ্রাপ্ত জলদাপাড়ার বনকর্তা বিমল দেবনাথ জানিয়েছেন, এমন কাণ্ডে একজন ভুটানের মহিলা কয়েক বছর আগে ধরা পড়েছিলেন।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *