Madarihat | কীভাবে নিঃশব্দে খুন, প্রশ্ন পুলিশেরও

Madarihat | কীভাবে নিঃশব্দে খুন, প্রশ্ন পুলিশেরও

ব্লগ/BLOG
Spread the love


নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট : মাদারিহাট রেঞ্জ অফিসের ক্যাম্পাসে থাকা কোয়ার্টার থেকে মা, ছেলে ও নাতির দেহ উদ্ধারের ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে। কোয়ার্টারে পাশের ঘরেই রাতে ছিলেন বড় ছেলে বিনোদ ওরাওঁ, তাঁর স্ত্রী পুষ্পা ও তাঁদের ছোট ছেলে বিভান। তিনজনের মৃত্যুতেও বিনোদ ও তাঁর স্ত্রী কিছুই টের পেলেন না কেন, তা তদন্তকারী অফিসারদের কাছেও ধন্দ। তাঁদের ধারণা, রবি তাঁর সৎমা ও ভাইপোকে মারার সময় ধস্তাধস্তির ঘটনা তো হবেই। আর রবির তুলনায় মা বিবি ওরাওঁয়ের শারীরিক গঠন অনেকটাই বলিষ্ঠ। তাহলে কীভাবে চুপিসারে রবি দুজনকে খুন করলেন, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে।

মা ও দাদার ওপর প্রতিহিংসার জন্যই রবি তাঁর সৎমা ও ভাইপোকে খুন করেছেন বলে মোটামুটি নিশ্চিত পুলিশ। তাঁদের সন্দেহ, রাতে সৎমা ও ভাইপোর সঙ্গে খাওয়ার সময় কোনওভাবে বিষ মিশিয়েছিলেন রবি। কারণ, তিনজনের কারও দেহেই আঘাতের কোনও চিহ্ন নেই। তাছাড়া আঘাত করা হলে পাশের ঘরে বিনোদ-পুষ্পা-বিভানের টের পাওয়ার কথা।

রেঞ্জ অফিসের এই কোয়ার্টারগুলি কাঠের তৈরি। মোট তিনটি ঘর ও একটি রান্নাঘর রয়েছে। রবির দাদা বিনোদ, স্ত্রী এবং ছোট ছেলে বিভানকে নিয়ে একটি রুমে থাকতেন। আর একটি রুমে থাকতেন রবি ও তাঁর দাদা বিনোদের বড় ছেলে বিবেক। বিবেকের সঙ্গে তার কাকার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল বিবেক। রবি ও বিনোদের সৎমা বিবি লোহার ওরাওঁ থাকতেন মথুরা চা বাগানে। বিনোদ মায়ের পেনশন থেকে আড়াই লাখ টাকা লোন নিয়েছিলেন। বিনোদ জানিয়েছেন, প্রতি মাসের প্রথম দিকে মা আসতেন এবং ঋণের কিস্তির টাকা নিয়ে চলে যেতেন।

রবি সম্ভবত পরিকল্পনা করেই এই খুন করেছে বলে আঁচ করেছে পুলিশ। কোয়ার্টারের পিছনদিকে রবিবার সন্ধ্যায় রবি তাঁর সব সার্টিফিকেট এবং চাকরির চেষ্টার কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলেছিলেন। চাকরি না পাওয়া আর মায়ের থেকে কোনও টাকা না পাওয়ার হতাশা তাঁকে গ্রাস করেছিল। পুলিশ জানতে পেরেছে, রবির বাবার মৃত্যুর পর মৃত্যুকালীন প্রায় ৭ লক্ষ টাকার পুরোটাই রবির দাদা বিনোদ নিয়েছিলেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি মাদারিহাট শালহামণ্ডল চৌপথির কাছে একটি পাকা ঘর তৈরি করছেন। বাবার টাকার একটি কানাকড়িও রবিকে দেননি তিনি। অভিযোগ, বিনোদ রবিকে বলেছিলেন ওই বাড়িতে থাকতে হলে শৌচাগার তৈরির টাকা রবিকে দিতে হবে। এই নিয়ে কয়েকদিন আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলাও হয়েছিল।

রেঞ্জ অফিসের কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, ইদানীং রবি কথাও কম বলতেন। খুব হতাশায় তিনি ভুগছিলেন সেটা বোঝা যাচ্ছিল। ঘটনার পর মাদারিহাটে আসেন রবির মামা নরেশ ওরাওঁ ও জামাইবাবু কিশোর ওরাওঁ। তাঁরা জানিয়েছেন, রবি তাঁর বাবার চাকরির জন্য কয়েক বছর ধরে খুব চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু কেন হচ্ছিল না তা তাঁরা বুঝে উঠতে পারেননি। কারণ, বিনোদ-রবির বাবা তো বন দপ্তরের স্থায়ী পদে চাকরি করতেন। আর চাকরিরত অবস্থায় তিনি মারা যান। তাছাড়া রবি মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। তা হলেও রবি কেন চাকরি পাননি, তা তাঁরা বুঝতে পারেননি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *