শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা ১০০ শয্যার ছাত্রী হস্টেলের দশা ক্রমশ বেহাল হচ্ছে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বেশ কয়েক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ওই দ্বিতল হস্টেলে সন্ধে নামলেই বসছে নেশার আসর। দুমড়ে-মুচড়ে ফেলা হয়েছে একাধিক ফ্যান। পাথর ছুড়ে একের পর এক জানলার কাচও ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একতলার শৌচালয়। উপড়ে ফেলা হয়েছে একতলারই একাধিক রুমের সুইচ বোর্ড। ঘটনাটি লুকসানের লালবাহাদুর শাস্ত্রী স্মারক বাংলা-হিন্দি হাইস্কুলের (Luksan)। সেখানে সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফে কস্তুরবা গান্ধি গার্লস হস্টেল প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর ওই ছাত্রী নিবাসের শিলান্যাস হয়েছিল।
মিশনের জলপাইগুড়ির জেলা শিক্ষা আধিকারিক (ডিইও) সঞ্জীব দাস বলেন, ‘দ্রুত হস্টেলটি চালু করতে স্কুলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রাখতে বলা হয়েছে।’ স্কুলের টিআইসি টিকারাম ছেত্রী বলেন, ‘হস্টেলটি চালু করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সম্প্রতি এজন্য প্রশাসনিক বৈঠক হয়। এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। দ্রুত বাকি কাজ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’
সম্প্রতি মেটেলি হাইস্কুলে কস্তুরবা গান্ধি গার্লস হস্টেলের উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে। তার আগে চালু হয় গয়েরকাটা গার্লস হাইস্কুলের হস্টেলটিও। বর্তমানে লুকসানের হস্টেলটি ছাড়াও লাটাগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের এরকম একটি হস্টেল চালু বাকি রয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে লাটাগুড়ির হস্টেলটির কাজ শেষপর্যায়ে। তবে লুকসানের হস্টেল চালু করা যেতেই পারে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়রা। মানিকচাঁদ শা নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘অনেকদিন ধরে হস্টেলটি এভাবে পড়ে রয়েছে। সন্ধে হলেই নেশাগ্রস্তরা এসে ভিড় জমায়। কয়েকবার বাধাও দিয়েছি। ওরা বলে, নিজেদের চরকায় তেল দিন।’ সুরজ প্রসাদ নামে আরেক বাসিন্দার কথায়, ‘দ্রুত চালু না হলে পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন হয়ে উঠবে। প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপ করুক।’
সমগ্র শিক্ষা মিশন সূত্রেই জানা গিয়েছে, তপশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের সংখ্যাধিক্য রয়েছে এমন স্থানগুলিতেই এ ধরনের হস্টেল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এসসি-এসটি সম্প্রদায়ের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরাই থেকে পড়াশোনার সুবিধা পাবে। নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, ‘লুকসানের হস্টেলটি চালু হয়ে গেলে চা বাগান ঘেরা এই এলাকার বহু ছাত্রী উপকৃত হবে। যোগাযোগের সমস্যার কারণে তাদের অনেকেরই স্কুলে যাতায়াত করতে অসুবিধে হয়। শুধু লুকসানেরই নয়, ব্লকের অন্যান্য স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীরাও সম্পূর্ণ নিখরচায় থাকার সুবিধা পাবে। হস্টেলটি দ্রুত চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’