নাগরাকাটা: মঙ্গলবার বিকেলে আধ ঘন্টার মধ্যে চলন্ত বাইক ও সাইকেলের ওপর হামলা চালিয়ে ৩ জনকে জখম করল চিতাবাঘ (Leopard Assault)। হাড়হিম করা ঘটনা দুটি ঘটে মঙ্গলবার বিকেলে নাগরাকাটার (Nagrakata) কলাবাড়ি চা বাগানে। বাইক চালক ও সওয়ারির মাঝখানে ঝাঁপ দেয় বুনোটি। অন্যদিকে, সাইকেল চালকের ওপর অতর্কিতে হামলা চালায় পেছন থেকে। জখমদের নাম যথাক্রমে রহমান আলি, রহিনা খাতুন ও আনজিত ওরাওঁ। তাঁদের মধ্যে প্রথম দুজনের বাড়ি খেরকাটা গ্রামে। তাঁরা সম্পর্কে জামাই ও শাশুড়ি।
অন্য আহত ব্যক্তি কলাবাড়ি বস্তির বাঁধ লাইনের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে কলাবাড়ি চা বাগানে বর্তমানে চিতাবাঘের আতঙ্ক চরমে। এরপরই বন দপ্তরের বন্যপ্রাণ শাখার বিন্নাগুড়ি রেঞ্জের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। ডায়না রেঞ্জের রেঞ্জার অশেষ পাল বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বন দপ্তরই বহন করবে।’ বিন্নাগুড়ি রেঞ্জের রেঞ্জার হিমাদ্রী দেবনাথ বলেন, ‘ওই এলাকার বাসিন্দাদের ধারাবাহিকভাবে সচেতন করা হচ্ছে। কলাবাড়ি বাগানে আগে থেকেই খাঁচা পাতা রয়েছে। বাগান পরিচালকরা চাইলে সেটি পরিবর্তন করে দেওয়া হবে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ যাতে ঠিকঠাক হয় সেই দায়িত্বও বাগান কর্তৃপক্ষকে পালন করতে হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে ডায়না নদী পেরিয়ে কলাবাড়ি বাজারে শাশুড়ি রহিনাকে নিয়ে ব্যাংকের কাজে গিয়েছিলেন জামাই রহমান। ফেরার সময় বিকেল ৫টা নাগাদ কলাবাড়ি চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশন লাগোয়া রাস্তায় হঠাতই একটি চিতাবাঘ তাঁদের বাইকের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। হামলার অভিঘাতে পেছনে বসা রহিনা রাস্তায় পড়ে জ্ঞান হারান। বাইক চালক রহমান কোনওরকমে দাঁড়িয়ে পড়েন। রহমানের পেটে ও রহিনার পেট ও মাথায় চিতাবাঘটি থাবা বসায়। রহমান বলেন, বুনোটি আমাদের মাঝখানে ঢুকে পড়ে। সামনের ও পেছনের দু পায়ের দুটি থাবা দু জনকে বসিয়ে দেয়। আমার থেকেও শাশুড়ি মায়ের আঘাত অনেক বেশি। ওই ঘটনার পর সন্ধ্যে ৬ টা নাগাদ একই রাস্তা ধরে সাইকেলে চেপে কলাবাড়ি বস্তির বাঁধ লাইনে বাড়ি ফিরছিলেন আনজিত ওরাওঁ। তিনি কলাবাড়ি বাগানে চৌকিদারের কাজ করেন। আগের স্থানেই চিতাবাঘটি এবার তাঁর ওপর হামলা চালায়। সাইকেল থেকে তিনি পড়ে যান। পেছনেই আরেকটি সাইকেলে ছিলেন তাঁর এক সহকর্মী শ্যাম ওরাওঁ। তিনি আনজিতকে উদ্ধার করে বাগানের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। শ্যালক চৈতন ওরাওঁ জানান, লাঠি বের করে শূন্যে এলোপাতাড়ি ঘোরানো শুরু করলে বুনোটি চম্পট দেয়। উল্লেখ্য কলাবাড়ি চা বাগানে এই নিয়ে গত ৬ মাসে ৭ জন চিতাবাঘের হামলায় জখম হলেন।