ফুলবাড়িঃ দীর্ঘ ২০ বছর মামলা চলার পর আদালতের নির্দেশে পৈতৃক জমির অধিকার ফিরে পেলেন এক বৃদ্ধ। ঘটনাটি ফুলবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তগর্ত পূর্ব ধনতলা এলাকার। অভিযোগ, মামলা চলাকালীন ভুয়ো কাগজ বের করে বিতর্কিত ১০ কাঠা জমিটির মালকানা দাবি করে সুকুমার সরকার নামে এক তৃণমূল নেতা। তিনি আবার স্থানীয় তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। যদিও বুধবার দুপুরে আদালতের নির্দেশে পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে জমিটি তুলে দেওয়া হয় প্রকৃত মালিক কমিরুল হকের হাতে। বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় জমিতে থাকা অবৈধ নির্মাণ ও সীমানা প্রাচীর। এরপর জমির বিবরণ দিয়ে একটি বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এদিন কমিরুল হক বলেন, ‘জমিটি আমার পূর্বপুরুষের ছিল। আদালতের নির্দেশে সরকারি আধিকারিকরা আজ জমির দখল আমায় দিয়েছেন। কিন্তু পূর্ব ধনতলার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তাপসী সরকারের স্বামী সুকুমার সরকার মাস ছয়েক আগে ভুয়ো কাগজ বের করে জমিটি নিজের নামে করতে চেয়েছিল। এরসঙ্গে আর বেশ কয়েকজন যুক্ত রয়েছে। কিন্তু জমিটি কেউ হরপ করতে পারল না।’
যদিও গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা সুকুমার সরকার সরাসরি সরকারি আধিকারীদের নিশানা করেছেন। সুকুমারের দাবি, ‘সরকারি দপ্তরের কর্মী, আধিকারিকদের টাকা খাইয়ে এইসব করা হচ্ছে। সেই কারণে জোর খাটিয়ে জমিটি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মীরা আমায় বলেছে জমিটি মাপজোকে ভুল রয়েছে। কিন্তু পরক্ষনে তাঁরা কথা ঘুরিয়ে নিয়েছেন। ওই জমিটি আমার সঙ্গে আরও কয়েকজনের নামে রয়েছে। জমি মাফিয়ারা এর পেছনে রয়েছে।’
পৈতৃক জমির মালিকানা নিয়ে ২০০৫ সালে কমিরুল হক জলপাইগুড়ি আদালতে মামলা করেন। যা নিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে শুনানি চলে। মামলা চলাকালীন কমিরুল জানতে পারেন, জমির ভুয়ো কাগজ বের করা হয়েছে। যদিও জমিটি যাতে ওই বৃদ্ধ পেয়ে যান, সেজন্য নোটিশ করে সরকারি আধিকারীদের সেই খালি করতে বলা হয়। নাজির সৌভিক সান্যাল, আমিন কমিশনার বিপুল ভট্টাচার্যরা জানান, যেভাবে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল সেভাবে জমিটি প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিক, কমিরুলের ছেলে সৈয়দ আলির কথায়, ‘যেভাবে সুকুমার সরকার প্রভাব খাটিয়ে জমিটি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তা কখনও আশা করিনি। এভাবে জমি হাতানোর চেষ্টা এই এলাকায় অনেক হচ্ছে। যার ফলে আমাদের মতো গরীব মানুষেরা সমস্যায় পরে যাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আর্জি যাতে আমাদের পাশে তারা থাকে।’ যদিও বিষয়টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য তাপসী সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।