সৌরভ রায়, কুশমণ্ডি: স্কুলে স্থায়ী শিক্ষিকা মাত্র এক। ছাত্রী সংখ্যা ৩৩। তাদের অনেকে আবার প্রতিদিন স্কুলে আসে না। ছাত্রীদের স্কুলে আনতে হিমসিম দশা শিক্ষিকা দিলারা হাসানের। এই পরিস্থিতিতে কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লস স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। ১৫ বছরের পুরোনো স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের স্কুলগুলির জেলা পরিদর্শক দেবাশিস সমাদ্দার বলেন, ‘শুধু কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লস নয়, আরও বেশ কিছু স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে।’
কুশমণ্ডি গার্লস স্কুলে দুজন অস্থায়ী শিক্ষক থাকায় কোনওরকমে ক্লাস চলছে। ২০১০ সালে কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লস স্কুলের পথচলা শুরু হয়েছিল। তখন দায়িত্বে ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ১২ বছর পর একজন স্থায়ী শিক্ষক পায় স্কুলটি। এখনকার টিচার ইনচার্জ দিলারা হাসান বলেন, ‘২০২২ সালে ১০৪ জন ছাত্রী ছিল। সেই সংখ্যা এখন কমে হয়েছে ৩৩।’
সংখ্যা কমার কারণ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘করোনার পর থেকে ছাত্রী সংখ্যা কমতে শুরু করে। কুশমণ্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের এই স্কুলে ভর্তি করা হলে জুনিয়ার গার্লসের ছাত্রী সংখ্যা বাড়ত।’ কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লসের পাশে কুশমণ্ডি হাইস্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা কিন্তু তিন হাজার ছাড়িয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে কুশমণ্ডি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করে পড়ুয়ারা হাইস্কুলে ভর্তি হচ্ছে। ফলে কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লসে ছাত্রী কমছে।
এতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। তাঁদেরই একজন জ্যোতি হালদার বলেন, ‘আমার মেয়ে বলেছে, পড়াশোনা তো ভালোই হয়। শিক্ষক থাকলে আরও ভালো হত।’ ২০১৬ সাল থেকে জুনিয়ার বেসিক স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু ছাত্রী সংখ্যা কম দেখে অনেকে কুশমণ্ডি জুনিয়ার গার্লসে যোগ দিতে চাননি। বিশিষ্ট নাট্যকর্মী তপন মজুমদার আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘প্রতি বছর যেভাবে পড়ুয়া সংখ্যা কমে যাচ্ছে, তাতে আগামীদিনে স্কুলটি বন্ধ হয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়।’