খোকন সাহা, বাগডোগরা: হাতি-মানুষ সংঘাত কমাতে কার্সিয়াং বন বিভাগে চালু হয়েছে নয়া প্রযুক্তি (Kurseong)। ওই প্রকল্পে সাফল্য মিললে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও ওই পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে বলে সোমবার ব্যাংডুবিতে জানালেন রাজ্য বন বিভাগের প্রধান মুখ্য বনপাল সন্দীপ সুন্দ্রিওয়াল। বর্তমানে রাজ্যে প্রথম বাগডোগরাতেই ওই নয়া প্রযুক্তি চালু হয়েছে। তবে প্রযুক্তিটি ঠিক কীভাবে কাজ করে? হাতি উপদ্রুত এলাকার মধ্যে অন্যতম হল কার্সিয়াং ডিভিশন। এইজন্য বাগডোগরায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৬০টি সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে গোটা এলাকায় ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চলে। ক্যামেরার সঙ্গে একটি চিপ লাগানো থাকে। ফলে কোনও তারের সংযোগ ছাড়াই ওয়াইফাই-এর মাধ্যমে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়। হাতির করিডর, এক বনাঞ্চল থেকে অন্য বনাঞ্চলে হাতির যাতায়তের পথে এবং বন থেকে বাইরে যাওয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ক্যামেরাগুলি বসানো হয়েছে।
১১টি কিউআরটি টিম সবসময় সতর্ক থাকে। হাতি বনের বাইরে এলে সিসিটিভিতে তা দেখা যায়। কিউআরটি টিম দ্রুত এলাকায় পৌঁছে হাতির দলকে বনে ফিরিয়ে দেয়। এতে বন বিভাগের গাড়ির জ্বালানির খরচ যেমন কম হচ্ছে, তেমনই ওই প্রযুক্তির ব্যবহার না করা হলে বাগডোগরা শহরে হাতি ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাও ছিল। এছাড়া কোনও এলাকায় হাতি দেখা গেলে কন্ট্রোল রুমে লাগানো ল্যান্ড ফোনে কিংবা মোবাইল এবং ওয়াকি-টকিতেও দ্রুত খবর দেওয়া হয়।
তবে কিছু মানুষ হাতির ছবি বা ভিডিও করতে গিয়ে বিপদের মুখে পড়েন। অন্যদিকে বাগডোগরা-নকশালবাড়ি এশিয়ান হাইওয়ে-২ সড়কের কিরণচন্দ্র করিডর পার করার পরে বাগডোগরা-কাটিহার রেললাইনেও যে কোনও সময় হাতি চলে আসতে পারে।
সোমবার কার্সিয়াং বন বিভাগের ডিএফও দেবেশ পান্ডে এবং সিসিএফ (হিল সার্কেল) সমীর গজমেরকে পাশে রেখে সন্দীপ বলেন, ‘বন্যপ্রাণী ও মানুষের সংঘাত ক্রমশই বাড়ছে। ইতিমধ্যে এই এলাকায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আমি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে কীভাবে এই সংঘাত কমানো যায় সেবিষয় আলোচনা করছি। যদিও বনকর্মীরা সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছেন রাত-দিন।’ অন্যদিকে, রেললাইনে বুনোদের মৃত্যু ঠেকাতে রেল বোর্ডের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠক হয় বলেও তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া হাতির যাতায়াতের পথে আবর্জনা ফেলা নিয়ে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেন। ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় আবর্জনা পরিষ্কার করে সতর্কতামূলক বোর্ড লাগানো হয়েছে। তবে উত্তরবঙ্গের সব রেঞ্জ অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করে এবং বাগডোগরায় নয়া প্রযুক্তির কন্ট্রোল রুম দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান মুখ্য বনপাল।