কৌশিক দাস, ক্রান্তি: ক্রান্তির (Kranti) কোনও স্কুলেই উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগ চালু নেই। একসময় লাটাগুড়ি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ওই বিভাগ থাকলেও বর্তমানে শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, গত বছর থেকে ভর্তিই বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ওই সমস্যা শুধু বিজ্ঞান বিভাগের নয়, কলা বিভাগেও শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকার পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে স্কুলগুলো যখন বারবার প্রশাসনের দরবারে শিক্ষক নিয়োগের আর্জি জানাচ্ছে, তখন হঠাৎ একসঙ্গে এত শিক্ষকের চাকরি বাতিলে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে স্কুলগুলোর মাথায়। লাটাগুড়ি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে। বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণির পঠনপাঠন চালানোই মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ক্রান্তি ব্লকের স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু এখন বিশবাঁও জলে। নতুন করে নিয়োগ হলে তবেই শিক্ষক দেওয়া সম্ভব বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বালিকা গোলে।
লাটাগুড়ি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বছর দশেক আগেও ক্রান্তি ও মাল ব্লকের বহু পড়ুয়া একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হত। তবে ওই বিভাগের একাধিক শিক্ষক অবসর নেন। এরপর নতুন করে আর নিয়োগ না হওয়ায় উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ওই স্কুলে রসায়ন ও অঙ্কের কোনও শিক্ষক নেই। বাধ্য হয়ে পড়ুয়ারাও বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে। গত কয়েকবছরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। ২০২৩-’২৪ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে মাত্র ৫ জন পড়ুয়া বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়।
যদিও ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কমলচন্দ্র রায় বলেন, ‘চলতি শিক্ষাবর্ষে পুনরায় বিজ্ঞান বিভাগ চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
ব্লকের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগের হতশ্রী দশায় গত ৪-৫ বছরে মাধ্যমিকের পর পড়ুয়ারা শহরের স্কুলগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। তাছাড়া আর উপায়ই বা কী? লাটাগুড়ি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে নামেমাত্র বিজ্ঞান বিভাগ এতদিন চালু থাকলেও বাকি স্কুলে তো সেটাও নেই। এই যেমন ক্রান্তি দেবীঝোরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিবছর ওই স্কুলের ছেলেমেয়েরা বাধ্য হয়ে অন্যত্র বিজ্ঞান পড়তে যাচ্ছে। আর যাদের সেই সামর্থ্য নেই তাদের বেছে নিতে হচ্ছে কলা বিভাগ।
এছাড়া, ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গা পেন্দা মহম্মদ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় কিংবা চ্যাংমারি ডব্লিউএমই উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়েও বিজ্ঞান বিভাগ নেই। ক্রান্তির মাঝে থাকা দেবীঝোরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হলে ওই বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও সুবিধা হবে।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মকসুদ আলমের কথায়, ‘আমাদের স্কুলে ছাত্র অনুপাতে শিক্ষকের বিপুল ঘাটতি রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কলা বিভাগে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব রয়েছে। উপযুক্ত পরিকাঠামো নিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ চালু হলে পড়ুয়াদের সুবিধা হবে।’