শুভদীপ শর্মা, ক্রান্তি: একের পর এক চিতাবাঘের হামলার পর দুটো খাঁচা পাতা হয়। তবু একটি চিতাবাঘও ধরা পড়েনি। জঙ্গল ও চা বাগান লাগোয়া ক্রান্তি (Kranti) ব্লকের পাইলকাধুরা গ্রামে মাঝেমধ্যে চিতাবাঘের দেখা মিলছে। যার জেরে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত। সন্ধ্যা নামতেই গোটা গ্রাম ঘরবন্দি। দিনেরবেলা এলাকাবাসী পটকা ফাটিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। বন দপ্তরের তরফে লাগাতার টহলদারি ও গ্রামবাসীদের সচেতন থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। বন দপ্তরের আপালচাঁদ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার নবাঙ্কুর ঘোষ বলেন, ‘গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যার পর কাউকে বাড়ির বাইরে বের হতে বারণ করা হয়েছে।’
ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের চা বাগান ও বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় পাইলকাধুরা গ্রাম অবস্থিত। কয়েক মাস ধরে গ্রামে একের পর এক চিতাবাঘের হামলা (Leopard Assault) হয়েছে। কখনও মাঠ থেকে ছাগল নিয়ে যাওয়া, চলন্ত বাইক অথবা চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের আক্রমণ। পরপর এধরনের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার দু’দিন গ্রামের সুবর্ণপুর চা বাগানে চিতাবাঘের হামলায় দুজন আহত হন। চিতাবাঘের হামলার পর বন দপ্তরের তরফে চা বাগানে একটি ও বাগানের পাশে গ্রামে একটি অর্থাৎ দুটি খাঁচা পাতা হয়েছে। তবে সেই খাঁচায় এখনও পর্যন্ত কোনও চিতাবাঘ ধরা পড়েনি। তবে বেশ কয়েকবার চিতাবাঘের দেখা মিলেছে। তারপর এই আতঙ্ক আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। চিতাবাঘের হামলার পর বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে চা বাগানের একটি সেকশনে কাজ বন্ধ রাখা হয়। তবে গরিব সাধারণ শ্রমিকদের তরফে বেশিদিন কাজ বন্ধ রাখা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকরা পটকা ফাটিয়ে কাজে যাচ্ছেন। স্থানীয় গৃহবধূ রত্না রায়, সবিতা রায়রা জানান, এত আতঙ্ক রয়েছে যে প্রয়োজন ছাড়া কেউ গ্রামের বাইরে বের হচ্ছেন না। সন্ধ্যার পর গোটা এলাকা শুনসান হয়ে যাচ্ছে। এর মাঝে শনিবার ও রবিবার এলাকায় চিতাবাঘের দেখা মিলেছে।
রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মিন্টু রায়ের বক্তব্য, ‘এই গ্রামে এতদিন হাতি বের হয়েছে। তবে চিতাবাঘের এরকম উপদ্রব আগে ছিল না। বন দপ্তরের পাশাপাশি গ্রামবাসীরা যাতে সতর্ক থাকেন সেটি বলা হয়েছে। যদিও বন দপ্তরের তরফে এলাকায় লাগাতার নজরদারি ও টহলদারি করা হচ্ছে।