উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ঘন বনাঞ্চল ও বাহারি জীববৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্য বর্তমানে মানব-বন্যপ্রাণী সংঘাতের মারাত্মক সংকটে ভুগছে। প্রতিনিয়ত বন্য প্রাণীর আক্রমণে প্রাণহানি, আহত হওয়া, ফসল ধ্বংস এবং কৃষকদের আর্থিক ক্ষতির ঘটনা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে বন্য শূকর (wild boar)-এর আক্রমণে বিপাকে পড়েছেন রাজ্যের অসংখ্য কৃষক। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেরালা সরকার ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইন (Wildlife Safety Act, 1972)-এ সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। এই সংশোধনের মাধ্যমে জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং জীবিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট বন্য প্রাণীদের সীমিতভাবে হত্যা বা নিধনের আইনি অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে বন ও বন্যপ্রাণী বিভাগকে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন চাওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন সচিবকে আইন সচিবের সঙ্গে পরামর্শ করে একটি প্রস্তাবিত আইনি খসড়া প্রস্তুতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়াটি প্রধানত বন্য শূকর সমস্যার সমাধান করতেই কেন্দ্রীভূত। সম্প্রতি কেরালার বিভিন্ন অঞ্চলে বন্য শূকর আক্রমণের কারণে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং কৃষিজমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বন্য শূকর নিধনের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছে।
তবে এই উদ্যোগ নিয়ে পরিবেশকর্মী এবং বন্যপ্রাণ অধিকার কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাঁদের মতে, এ ধরনের পদক্ষেপ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে আরও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। তবে কেরালা সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, এই উদ্যোগ মানবিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে এবং প্রাণী অধিকার, পরিবেশ সংরক্ষণ ও জননিরাপত্তার মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করা হবে।