দিনহাটা: প্রত্যেক বছরই কৌশিকী অমাবস্যার রাতে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে ছিন্নমস্তা পুজোকে ঘিরে ভক্তদের ঢল নামে। কৌশিকী অমাবস্যার পুণ্য তিথিতে তান্ত্রিক মতে আয়োজিত হয়ে থাকে ছিন্নমস্তা কালীপুজো। সারারাত ধরে চলে সেই পুজো। রাতভর পুজো দেখার পর ভোরে প্রসাদ গ্রহণ করে বাড়ি ফেরেন সাধারণ মানুষ। তবে সেই পুজোয় যেতে হলে দেখাতে হয় ভারতীয় পরিচয় পত্র। সঙ্গে অনুমতি নিতে হয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর। এমনই নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রত্যেক বছরই দিনহাটা ২ ব্লকের সাহেবগঞ্জে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের ভেতরে হয়ে থাকে ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো।
সীমান্তে নিরাপত্তার ঝক্কি সামলে পুজো দেখতে ভিড় জমান দূর দূরান্ত থেকে আসা ভক্তরা। পুজোর জন্যে সারারাত খোলা থাকে কাঁটাতারের গেট। সেই গেট দিয়েই জিরো পয়েন্টের ভেতরে থাকা ছিন্নমস্তা মায়ের মন্দিরে পৌঁছান ভক্তরা। সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্বে একদিকে বিএসএফ অন্যদিকে সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশও তৎপর থাকে। কাঁটাতারের ভেতরে প্রায় ৫০ মিটার দূরে সুসজ্জিত দোচালা মন্দির ও পাশে পুকুর আর সেখানেই মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন দেবী ছিন্নমস্তা। কাঁটাতার পেরিয়ে দুদিকে রয়েছে কৃষিজমি আর মাঝের আলপথ দিয়ে পৌঁছতে হয় সেই মন্দিরে। সেখানেই দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে সাহেবগঞ্জ মা ছিন্নমস্তা সৎকার সমিতির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ছিন্নমস্তা মায়ের পুজো। এদিকে মন্দিরে আসা ভক্তদের জন্য সেখানে রয়েছে ভান্ডারাও।
কথিত আছে ১৯৭৮ সালের প্রবল খরা ও অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তি পেতে মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে কৌশিকী অমাবস্যায় শুরু হয় সেই পুজো। সেই থেকে নিয়ম নিষ্ঠা মেনে প্রত্যেক বছরই পুজো হয়ে থাকে সেখানে। জাগ্রত ওই মন্দিরের সঙ্গে বহু মানুষের শ্রদ্ধা বিশ্বাস ও ধর্মীয় আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। এদিন সেখানে পুজো দেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ছাড়াও বিএসএফের আধিকারিকরা এবং প্রশাসনিক কর্তারা।