উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ একদিকে যখন ‘ভোট চুরি’-র অভিযোগে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনে দরবার করতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই দিল্লিতে এক সরকারি অনুষ্ঠানে দেখা গেল এক অপ্রত্যাশিত দৃশ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাশে দাঁড়িয়ে খোশগল্পে মেতে উঠেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দৃশ্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
সোমবার দিল্লির বাবা খরক সিং মার্গে নবনির্মিত সাংসদ আবাসনের উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছিল। ১৮৪টি ফ্ল্যাটের এই নতুন আবাসন উদ্বোধনের মূল আকর্ষণ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণও। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, এদিন মোদি একগাল হেসে কল্যাণের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কল্যানকে দেখে মোদি বলে ওঠেন, “ক্যা কল্যাণজি, কল্যাণ হ্যায় তো?” এরপর তিনি আবার বলেন, “সব কুছ কল্যাণ হ্যায় তো?” যার জবাবে কল্যাণ কেবল ‘হ্যাঁ’ সূচক উত্তর দেন।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। অনুষ্ঠান শেষে ছবি তোলার সময় মোদি নিজে উদ্যোগী হয়ে মঞ্চে রাখা চেয়ার সরাতে শুরু করেন। তাঁর পাশে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেয়ার সরানোর কাজে হাত লাগান। ছবি তোলার সময় দেখা যায়, তৃণমূল সাংসদ ঠিক প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কিরেন রিজিজু সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও।
নির্বাচন কমিশন অভিযানে অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে কল্যাণ জানিয়েছেন, এসআইআর সংক্রান্ত একটি মামলায় তিনি সুপ্রিম কোর্টে ছিলেন। এই বিষয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অবগত করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়াও, সাংসদ আবাসনের হাউস স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসেবে এই আবাসনের শেষ পর্বের কাজ তিনি তত্ত্বাবধান করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সম্প্রতি তৃণমূলের মুখ্যসচেতক পদ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের পর এই ঘটনা বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পদত্যাগ এবং তার পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর কিছু মন্তব্য বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল। যদিও পরে তিনি অনুতাপ প্রকাশ করেন এবং দিদির আশীর্বাদ পাওয়ার কথা জানান। রবিবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর একাধিকবার ফোনে কথা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিরোধীরা যখন রাস্তায় নেমে লড়াইয়ে ব্যস্ত, ঠিক তখনই মোদির পাশে কল্যাণের উপস্থিতি রাজনৈতিক মহলে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, দলের উপর চাপ বাড়াতেই কল্যাণ এই সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে এর পেছনে রাজনৈতিক সমীকরণের কোনও নতুন ইঙ্গিত আছে কিনা, তা নিয়েই এখন সরগরম রাজনৈতিক মহল।