অনির্বাণ চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ: বাজল তোমার আলোর বেণু। এখনও মাস খানেকেরও বেশি বাকি দুর্গাপুজোর। তবে মুখ্যমন্ত্রী এক লক্ষ দশ হাজার টাকার সরকারি অনুদান ঘোষণা করার পরই আবাহনের সুরে সরগরম হয়ে উঠেছে কালিয়াগঞ্জ (Kaliyaganj)। শহরের বিভিন্ন পাড়া, ক্লাব ও বারোয়ারি কমিটিগুলি শুরু করে দিয়েছে পুজো প্রস্তুতি। মৃৎশিল্পী থেকে প্যান্ডেল ও লাইট ডেকোরেটাররা ব্যস্ত অগ্রিম চুক্তি সেরে রাখতে।
এর মধ্যেই চিড়াইলপাড়া এলাকায় জমে উঠেছে ঠান্ডা লড়াই। মুখোমুখি দুটি নামী ক্লাব- চিড়াইলপাড়া বারোয়ারি দুর্গোৎসব কমিটি, যারা এ বছর পালন করছে প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী এবং বৈশালী সংঘ, যারা পা রাখছে সুবর্ণ জয়ন্তীতে। শুধু পুজোর আয়োজন নয়, সমাজসেবা থেকে বিশেষ চমক- সব ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ তৈরি হয়েছে দুই ক্লাবের মধ্যে। তবে শেষ মুহূর্তের চমক নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ দুই ক্লাবের পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। ফলে উৎসুক কালিয়াগঞ্জবাসী অপেক্ষায় রয়েছেন বিগ বাজেটের এই দুই পুজোর আসল আকর্ষণ দেখার জন্য।
চিড়াইলপাড়া বারোয়ারি দুর্গোৎসব কমিটির অন্যতম সদস্য রিন্টু সিং বললেন, ‘বুর্জ খালিফার আদলে প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সেজে উঠবে প্যান্ডেল। প্রতিমা হবে সাবেকি ধাঁচের। পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজও করা হবে।’
অন্যদিকে বৈশালী সংঘের পুজো কমিটির সভাপতি অমিতাভ লালা জানালেন, এ বছর তাঁদের ক্লাবের পুজোয় কোনও নির্দিষ্ট বাজেট করা হয়নি। তবে ইতিমধ্যেই ভালো প্যান্ডেল, লাইট ও সাবেকি প্রতিমার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্লাব সভাপতি বলেন, ‘৫০তম বর্ষে ক্লাবের প্রবীণ সদস্যদের বিশেষ সংবর্ধনা ও প্রয়াত সদস্যদের পরিবারকে আমরা সম্মানিত করব। সবুজায়নের লক্ষ্যে দর্শনার্থীদের হাতে চারাগাছ তুলে দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে। কালিয়াগঞ্জবাসীকে ভালো পরিবেশের মধ্যে এক দর্শনীয় পুজো উপহার দেওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
বৈশালী ক্লাবের সদস্য বিশ্বজিৎ সাহার কথায়, ‘এ বছর সপ্তমী ও অষ্টমীতে পাড়ায় নিরামিষ ভোগ খাওয়ানো হবে। সেদিন কোনও বাড়িতে রান্না হবে না। মায়ের পুজোয় যদি পাড়ার মহিলা ও বাচ্চারা আনন্দ না করে, তাহলে পুজোর আনন্দ অসম্পূর্ণ থেকে যায়।’ সব মিলিয়ে প্ল্যাটিনাম বনাম সুবর্ণ জয়ন্তীর লড়াই ঘিরে এখন থেকেই উচ্ছ্বাস তুঙ্গে কালিয়াগঞ্জে। আর পুজোর দিনে চিড়াইলপাড়া হয়ে উঠতে চলেছে উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।