শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: ‘একুশে জুলাই অনেক চমক হবে’, মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। ২১শে জুলাই উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি যুব মোর্চা। কিন্তু একুশে জুলাই বলতে রাজ্যবাসী তৃণমূলের ধর্মতলার মঞ্চকেই বোঝেন। ফলে তাঁর দলত্যাগ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নানান জল্পনা। সতর্কতার সঙ্গে জল মাপা শুরু করে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বও। এরই মাঝে দিলীপকে তৃণমূলে স্বাগত জানালেন আরও এক বিজেপি ত্যাগী প্রাক্তন সাংসদ জন বারলা (John Barla)। তাঁর কৌশলী বার্তা, ‘যেখানে সম্মান নেই, সেখানে থেকে লাভ কী?’ হাতের পদ্মফুল ফেলে কিছুদিন আগে জোড়াফুলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বারলা। তাঁর বক্তব্য, ‘দিলীপবাবু এরাজ্যে বিজেপিকে দাঁড় করিয়েও প্রাপ্য সম্মান পাননি। যোগ্যদের প্রকৃত সম্মান দিতে জানেন একমাত্র দিদি।’ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে তাঁকে সম্মান দিয়েছেন, তাও দাবি করলেন।
বঙ্গ রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষ এবং চমক প্রায় সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর যে কোনও মন্তব্য নানান কৌতূহলের সৃষ্টি করে। একুশে জুলাই নিয়েও শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা। এই জল্পনার মাঝেই সোমবার বারলা বলেন, উত্তরবঙ্গে বিজেপির পালে হাওয়া জুগিয়েছিলাম আমি ও আমার সঙ্গীরা। দক্ষিণবঙ্গে কাজটি করেছিলেন দিলীপ ঘোয। তাঁর নেতৃত্বেই এরাজ্যে বিজেপি ৩ বিধায়ক থেকে ৭৭-এ এবং ২ সাংসদ থেকে ১৮-এর দলে পরিণত হয়েছিল। যদিও বিজেপিতে এখন যাঁরা নেতা আছেন, তাঁরা স্রেফ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতে দিলীপ ঘোষকে ব্রাত্য করে রেখেছেন। ওঁরা আর কাউকে নেতা হতে দিতে রাজি নন। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ওঁর আর বিজেপিতে থাকা উচিত নয়।’ এদিন দিলীপের সাংগঠনিক দক্ষতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞারও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন একদা তাঁর নেতৃত্বে পদ্ম শিবিরের রাজনীতি করা বারলা।
বারলার এহেন বক্তব্যকে অবশ্য গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। আলিপুরদুয়ারের বর্তমান সাংসদ বিজেপি নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘যাঁকে কেউ চিনত না তাঁকে সর্বভারতীয় পরিচিতি দিয়েছিল বিজেপি। এমপি, মন্ত্রী সবকিছুই বানিয়েছিল আমাদের দল। সেই জন বারলা নিজের স্বার্থসিদ্ধি না হওয়ায় তৃণমূলে গিয়ে এখন বড় বড় কথা বলছেন। দিলীপবাবু একজন বিচক্ষণ নেতা। বারলা ওঁর নখেরও যোগ্য নন। কীভাবে ও কোথায় থাকলে রসাতলে চলে যাওয়া একটা রাজ্যকে উদ্ধার করা সম্ভব, তা দিলীপবাবু ভালোই জানেন। বারলার পরামর্শের কোনও দরকার দিলীপবাবুর আছে বলে মনে করি না।’ হাওয়া গরম করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মনোজ।
এদিকে, তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের কর্মসূচির প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বারলা। জলপাইগুড়ি জেলার নানা জায়গায় উপস্থিত থেকে বক্তব্যও রাখছেন।