জামালদহ: পড়ুয়া-অভাব সহ একাধিক সমস্যার জেরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে মেখলিগঞ্জ ব্লকের উছলপুকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের চরচরাবাড়ি বাজার থেকে রানিরহাট যাওয়ার রাস্তায়, রাজ্য সড়ক সংলগ্ন চরচরাবাড়ি জুনিয়ার হাইস্কুল। এমনই আশঙ্কা শিক্ষক সহ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও পড়ুয়া সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। স্কুলে এখন মোট তিনজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষাকর্মী রয়েছেন। রয়েছে কম্পিউটার ল্যাব এবং মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছেন মাত্র ১৪ জন ছাত্র। তাদের অনেকেই নিয়মিত স্কুলে আসে না বলে অনেক সময় ক্লাস না করিয়েই ঘুরে যান শিক্ষকরা। বারবার অভিভাবকদের বুঝিয়েও স্কুলের ছাত্রসংখ্যা বাড়াতে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ। একপ্রকার চূড়ান্ত অবহেলায় কোনওরকমে চলছে সরকারি জুনিয়ার স্কুলটি।
স্কুলের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক অখিল বর্মন বলেন, ‘করোনা অতিমারির পর থেকে ছাত্রসংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। এক সময় প্রায় দুশোর বেশি পড়ুয়া ছিল এই স্কুলে। অভিভাবকদের অনীহায় এখন পড়ুয়া সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। পাশাপাশি পরিকাঠামোগত বেশ কিছু সমস্যাও আছে।’ সহকারী শিক্ষক স্নেহাশিস ঘোষ বলেন, ‘সন্ধে হলেই স্কুল চত্বর সমাজবিরোধীদের দখলে চলে যায়। প্রায়শই দরজা-জানলা ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকে। সকালে মদের বোতল পরিষ্কারের পরে ক্লাস শুরু করতে হয়। একাধিকবার জলের কল চুরি গিয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতা ছাড়া এইভাবে একটি স্কুল চলতে পারে না’।
মেখলিগঞ্জের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিতোষ ওরাওঁ বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হয়েছে। পড়ুয়াভর্তি কমে যাওয়ার বিষয় নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ বর্মন, সুবোধ বর্মনরা জানাচ্ছেন, পাঁচশো মিটার দূরেই রয়েছে শৌলমারি উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেখানে প্রতিটি বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক সহ অন্য অনেক সুযোগসুবিধা রয়েছে। অনেক সময় পড়ুয়াদের এক স্কুল থেকে অন্যত্র নিয়ে যেতে শিক্ষা পোর্টালে নথিভুক্তির সমস্যায় পড়তে হয়। তাই ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানকে এই বিদ্যালয়ে পড়াতে চাইছেন না। ফলে এই স্কুলে ছাত্রভর্তি তলানিতে এসে ঠেকেছে।