অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: এমনিতে মেলার সময়সীমা প্রতিবছর দশদিন থাকে। তার মধ্যে গত রবিবার ছাড়া আর কোনওদিন ব্যবসা সেরকম হয়নি বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। তারপর আবার মেলায় অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বুধবার দিনভর মেলার দোকানপাট বন্ধ রেখেছিলেন। সে কারণে ভালো ব্যবসার আশায় ব্যবসায়ী এবং মেলা কমিটির অনুরোধে সরকারিভাবে বাড়ানো হল জল্পেশমেলার (Jalpesh) সময়সীমা।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন বলেন, ‘জেলা পরিষদের কাছে মেলার সময় বাড়ানো নিয়ে মেলা কমিটির তরফে অনুরোধ জানানো হয়। আলোচনার মাধ্যমে রবিবার পর্যন্ত মেলা চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারি স্টল থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক মঞ্চে অনুষ্ঠান সবকিছুই চলবে এই দু’দিন।’
প্রতিবছর শিবরাত্রির দিন থেকে শুরু হয়ে মেলা চলে দশদিন ধরে। সেইমতো এবছর শুক্রবার মেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই দশদিনে শুধুমাত্র গত রবিবার বাদ দিয়ে বাকি একদিনও সেভাবে মেলায় বেচাকেনা হয়নি বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। এরপর মেলা কমিটি জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কাছে মেলার সময়সীমা দু’দিন বাড়িয়ে রবিবার পর্যন্ত করার ব্যাপারে অনুরোধ জানায়। সেই অনুরোধ মঞ্জুর হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা। জল্পেশমেলার এক দোকানদার মিন্টু সরকারের বক্তব্য, ‘মেলায় জনসমাগম হলেও এবছর অদ্ভুতভাবে দোকানগুলিতে সেরকম বিক্রি হয়নি। দু’দিন মেলার সময় বাড়ায় কিছুটা হলেও উপকার হবে বলে আশা করছি।’
এবছর শুরু থেকে জল্পেশমেলার সঙ্গে বিতর্ক হাত ধরে রেখেছিল। এবছর মেলার ইজারা দিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ রেকর্ড অঙ্কের টাকা আয় করেছে। ইজারা বাবদ জেলা পরিষদের আয় হয়েছে ২৬ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। মেলার একেবারে শেষের দিকে এসে মেলা কমিটির সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘাত চরম আকার নেয়। ইজারাদার মেলায় দোকানের ভাড়া অতিরিক্ত বাড়ালে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। বৃহস্পতিবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়। মেলার ইজারাদার সত্যেন্দ্রনাথ শর্মা জানান, মেলার সময়সীমা যে দু’দিন বেড়েছে, সেই কথা বিভিন্নভাবে প্রচার করা হচ্ছে। শনি এবং রবিবার ছুটির দিন। ফলে সেই দিনগুলোতে মেলায় জনসমাগম বেশি হবে এবং ব্যবসাও ভালো হবে বলে আশা করছেন সকলে। আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরাও। আরেক ব্যবসায়ী তাপস সরকার বলেন, ‘এবছর গোটা মেলায় একটি মাত্র রবিবার পড়েছিল। শুধুমাত্র সেদিনই ভালো বিক্রি হয়েছে। রবিবার অবধি মেলা চললে আরেকটু ব্যবসার বাড়তি সুযোগ মিলল।’ ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ জানিয়েছেন, মেলায় রবিবার পর্যন্ত সব ধরনের পুলিশি নিরাপত্তা রাখা হচ্ছে।