Jalpaiguri | শরতের আকাশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুড়ি

Jalpaiguri | শরতের আকাশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঘুড়ি

ব্লগ/BLOG
Spread the love


অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: একটা সময় ছিল, যখন বিশ্বকর্মাপুজোর প্রাক্কালে ঘুড়ি ওড়ানোর হিড়িক পড়ে যেত ছেলে-ছোকরাদের মধ্যে। রেডিমেড কেনার পাশাপাশি অনেকে নিজেও বানিয়ে নিত ঘুড়ি। সেই দিন আর নেই। ক’দিন বাদেই বিশ্বকর্মাপুজো। কিন্তু, ঘুড়ির দোকানে বিক্রি নেই বললেই চলে। নিজে ঘুড়ি বানিয়ে নিতেও এখন সেভাবে কাউকে আর দেখা যায় না।

জলপাইগুড়ি শহরের (Jalpaiguri) এক ঘুড়ির দোকানে এসেছিলেন ক্রেতা অপূর্ব চাকি। জানালেন, ওড়ানোর জন্যে নয়, পুজোমণ্ডপের ডেকোরেশনে ব্যবহার করবেন ঘুড়ি। কালো ঘুড়ি লাগবে। কিন্তু না মেলায় ফিরে গিলেন তিনি।  বিক্রেতারা কিন্তু কাগজের ঘুড়ি, প্লাস্টিকের ঘুড়ির সঙ্গে লাটাই, মাঞ্জা সুতো সবই মজুত রাখছেন। ঘুড়ির দাম ৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা। আছে চিল, রকেট সহ রকমারি ডিজাইনের। কিন্তু ক্রেতা কোথায়?

বিক্রেতা রাজু আগরওয়ালের মন্তব্য, ‘বিশ্বকর্মাপুজোর আগে ব্যাপক বিক্রি হত একসময়। শীতকাল অবধি বিক্রি চলত। কিন্তু বেশ কয়েকবছর থেকেই ব্যবসা একদম মন্দা। এখন বাচ্চারা মোবাইল গেমে আসক্ত।’ ঘুড়ি ওড়ানোর যে কী আনন্দ, তা এখনকার খুদেরা উপলব্ধিই করতে পারবে না। বলছেন প্রবীণরা। শহরের প্রবীণ নাগরিক অপূর্ব সরকারের কথায়, ‘এখন আর ভোকাট্টার পর ঘুড়ির পেছনে ছোটে না কেউ। ঘুড়ি কাটাকাটির সেই লড়াই নেই। ঘুড়ি উড়ত যে মাঠ থেকে সেখানে আজ বড় বড় অট্টালিকা। বাবা-মায়েরাও আর উৎসাহ দেন না।’

বছরের এই সময়টায় ঘুড়ি ওড়ানোর রীতি বহুকাল থেকেই চলে আসছিল। কিন্তু আধুনিক জীবনযাত্রার মাঝে একটু একটু করে হারিয়েছে পুরোনো অনেক অভ্যাস। ঘুড়ির ব্যাপারটিও তাই। প্রতি বছর একটু একটু করে আকাশ থেকে কমছে ঘুড়ির সংখ্যা। ঘুড়ি ব্যবসায়ী বিকাশ সেন বলেন, ‘বিশ্বকর্মাপুজোর আগের দিন কিছু ঘুড়ি এনে রেখে দেব, কিন্তু বিক্রি হবে বলে মনে হয় না। গত বছর ১৫০ ঘুড়ি এনেছিলাম। বিক্রি করেছি ৩০-৪০টি। তাই এবার অত আনব না।’

জনাকয়েক বালক-কিশোরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আকাশে ঘুড়ি উড়তেই দেখেনি তারা। শহরের পাহাড়িপাড়ার বাসিন্দা বছর দশেকের সুজয় দাস বলে, ‘ঘুড়ি উড়তে দেখিনি, দেখেছি শুধু বইয়ের পাতায়।’ ১২ বছরের আকাশ বিশ্বাস বলে, ‘দুই-একবার ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা করেছি। খুব বোরিং। তাই হয় ক্রিকেট খেলি নয়, মোবাইলে গেম।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *