অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: মার্চের শেষে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরের তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। রোদের তাপ, সঙ্গে বায়ুর শুষ্কতা- দুটোতেই নাজেহাল শহরবাসী। বাইরে বেরোলে রেহাই নেই। এই পরিস্থিতিতে ঘরে একটু স্বস্তি খুঁজে পেতে শহরবাসী ঝুঁকছেন ইন্ডোর প্ল্যান্টের দিকে।
এই ধরনের গাছগুলো যেমন বায়ু দূষণ রুখতে সাহায্য করে, ঘর ঠান্ডা রাখে, তেমনই ঘরের সৌন্দর্যায়নে যথেষ্ট উপযোগী। টি-টেবিলে হোক কিংবা ব্যালকনিতে, ঘরের চেহারাই বদলে দিচ্ছে এইসব গাছ। সময়ের সঙ্গে শহরের দখল নিচ্ছে উঁচু বিল্ডিং। বাগান করার জায়গা নেই বললেই চলে। তাই ঘরে বা বারান্দায় শখের গাছ লাগিয়ে গার্ডেনিংয়ের চাহিদা মেটাচ্ছেন শর্মিষ্ঠা রায়ের মতো অনেকে। তাঁর কথায়, ‘বাড়ির বাইরে অতটা জায়গা নেই। তাই ঘরেই পিস লিলি, লিটল ব্যাম্বু, স্নেক প্ল্যান্ট, জেড প্ল্যান্ট রাখি। ঘরে বিশেষ কয়েক ধরনের গাছ রাখলে অক্সিজেনের যেমন জোগান হয়, তেমনি ঘরটাও দেখতে ভালো লাগে।’
নিজের ঘরের পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে অন্যদের সচেতন করতে শহরে অনেক অনুষ্ঠানে, রক্তদান শিবিরে অনেকেই ইন্ডোর প্ল্যান্ট উপহার দিচ্ছেন। ফলে অপরিচিত কিছু গাছের বিক্রিও বাড়ছে। রফিউল আলিমের মতো নার্সারি মালিক ও দোকানিদের বক্তব্য, শুধু ঘর সাজাতে নয়, স্বাস্থ্য নিয়েও মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। তাই ইন্ডোর প্ল্যান্টের প্রতি মানুষের আগ্রহ অনেক গুণ বেড়েছে। বাসিন্দা তনুশ্রী রায়ের কথায়, ‘ছোটবেলা থেকে গাছ নিয়ে থাকতে খুব ভালোবাসি। বাগানের গাছের সঙ্গে ইন্ডোর প্ল্যান্ট খুবই ভালো লাগে।’
এখন দোকানের সঙ্গে অনলাইনেও বিক্রি বাড়ছে জেড প্ল্যান্ট, মনস্টেরিয়া, সাকুলেন, স্নেক প্ল্যান্টের মতো ইন্ডোর প্ল্যান্টের। লিটল ব্যাম্বু ট্রি’র মতো কিছু গাছকে শুভ বলেও মনে করেন অনেকে। পরিবারের মঙ্গলের জন্য এই ধরনের গাছ ঘরে রাখা হয় বলে জানালেন নার্সারি ব্যবসায়ী নিমাই পাল। তাঁর কথায়, ‘আগেও জলপাইগুড়িতে অনেকে বাগান করতেন। কিন্তু এখন ইন্ডোর প্ল্যান্টের চাহিদা বেশি। লোকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন গাছ দেখে আমাদের কাছে এসে খোঁজ করেন। আমাদের এখানে তো সব গাছ হয় না। তাই আমরা কলকাতা, দার্জিলিং, পুনে সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আনিয়ে দিই।’
ঘরের বাতাস শুদ্ধ রাখতে এরিকা পাম, পিস লিলি, ড্রেসিনা, স্পাইডার প্ল্যান্ট, বস্টন ফার্নের কোনও বিকল্প নেই। বাতাসের দূষণ শুষে বিশুদ্ধ অক্সিজেন দিতে পারে এই ধরনের ইন্ডোর প্ল্যান্ট বলে জানালেন ব্যবসায়ী মহম্মদ রফি। ঘর সাজানোর জন্য বাসিন্দা শিপ্রা দত্তর পছন্দ লেডি পাম, লাকি ব্যাম্বু। এভাবেই ঘরের ভেতর ‘বাগান’ করায় ঝোঁক বাড়ছে শহরবাসীর।