অভিরূপ দে, ময়নাগুড়ি: আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বিপাকে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ির (Mainaguri) ভুট্টাচাষিরা। অনেক জায়গাতেই জমিতে জল জমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা জমি থেকে পেকে যাওয়া ভুট্টা তোলেননি, তাঁরা যেমন সমস্যায় পড়েছেন, একইরকমভাবে যাঁরা জমি থেকে ভুট্টা তুলে এনেছেন, তাঁরাও রোদের অভাবে ভুট্টার দানা ঠিকমতো শুকোতে পারছেন না। ময়নাগুড়ি ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে এই সমস্যা।
ময়নাগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক কমলেশ বর্মন বলেন, ‘চলতি বছর কয়েকদিন আগে থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। জমি থেকে ভুট্টা তুলে আনার পর যাতে কোনওভাবেই বৃষ্টির জল না পায় সেদিকটি কৃষকদের দেখতে হবে।’
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ময়নাগুড়ি ব্লকে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে চলতি বছর ভুট্টা (Corn) চাষ হয়েছে। চলতি বছর ব্লকজুড়ে ব্যাপক ভুট্টার ফলন হয়৷ মূলত এপ্রিল মাসের শেষ ও মে মাসের শুরুর দিক থেকে জমি থেকে ভুট্টা ঘরে তোলার কাজ শুরু করেন কৃষকরা। অনেক কৃষকই ভুট্টা সংগ্রহ করে মেশিন দিয়ে ঝাড়াই করার পর রোদে শুকোতে পারছেন না। অনেকে জমি থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করলেও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য তা ঝাড়াই করতে পারছেন না। তার থেকেও বেশি সমস্যায় পড়েছেন যাঁরা এখনও জমি থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করেননি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমি একেবারে জলে ভরে গিয়েছে। এমন দুরবস্থা যে ভুট্টা পচতে শুরু করেছে।
ময়নাগুড়ির দক্ষিণ মৌয়ামারি এলাকার ভুট্টাচাষি কাবুল রায়ের দেড় বিঘা জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কাবুল বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ভুট্টা পচতে শুরু করেছে। তাই উপায় না পেয়ে জল জমা অবস্থাতেই ভুট্টা তুলতে শুরু করেছি।’
ভোটপট্টি এলাকার ভুট্টাচাষি অমিয় বর্মনের বক্তব্য, ‘জমি থেকে ভুট্টা তোলার পর ঝাড়াই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রোদের অভাবে ভুট্টা শুকোতে না পারার কারণে ভুট্টার দানা নষ্ট হতে বসেছে।’ একই বক্তব্য উল্লাডাবরির ভুট্টাচাষি আশিস দাস, সাপ্টিবাড়ির পঙ্কজ রায় ও চূড়াভাণ্ডারের কেশব বর্মনের। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ খগেন রায় বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে কোথায় কোথায় ভুট্টা চাষে ক্ষতি হয়েছে এই তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।’
বৃষ্টির কারণে নষ্ট হতে বসা গাছ থেকে তড়িঘড়ি ভুট্টা সংগ্রহ চলছে ময়নাগুড়িতে।/বৃষ্টির কারণে ময়নাগুড়িতে নষ্ট হতে বসেছে ভুট্টা।