পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: হেলেন কেলারের নাম অনেকেই শুনেছেন। বিশেষভাবে সক্ষম এই আমেরিকান লেখিকার জীবন অনেককে অনুপ্রেরণা দেয়। ব্রাজিলিয়ান সার্ফার ডেরেক রাবেলোও দৃষ্টিহীন হয়েও সার্ফিং করতেন। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) নগর বেরুবাড়ির নবীন মালাকার তাঁদের থেকে কম যান না। ছোট থেকে দুই চোখে দেখতে না পেলেও নদীতে নেমে হাত দিয়ে মাছ ধরতে পারেন ওই বৃদ্ধ।
পাঙ্গা, যমুনা, করলা নদীতে নেমে জলের তলা থেকে হাতের মুঠোয় বন্দি করতেন এক কেজি ওজনের রুই, কাতলা, ট্যাংরা, টাকি থেকে বিভিন্ন নদীয়ালি মাছ। স্ত্রী ফুলমতিকে নিয়ে সংসার। দুই ছেলেমেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরেও বাবা-মাকে কেউ দেখেন না বলে আক্ষেপ করলেন ফুলমতি। নবীন জানালেন, বার্ধক্য ভাতা পান। কিন্তু তা দিয়ে তো আর সংসার চলে না। ছেলেমেয়েরাও দেখেন না। তাই জঙ্গল ঝোপঝাড় থেকে শাকপাতা কুড়িয়ে, মাছ বিক্রি করে কোনওমতে সংসার চালান। নবীনের কথায়, ‘আগে দেড়-দুই কেজি ওজনের রুই, কাতলা, মৃগেল মাছ ধরেছি। এখন বয়সের ভারে অল্পই মাছ ধরতে পারি। জঙ্গলের কচু, ঢেঁকি শাক এবং নদীর মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করি।’
নবীন জানালেন, ১০ বছর বয়স থেকে নদীতে মাছ ধরেন। এখন তাঁর বয়স উনষাট বছর। জলে নামতেই জলের নীচে ঘোরাফেরা করা মাছেদের স্পর্শ পেলেই তড়িৎগতিতে সেগুলোকে ধরে ফেলেন। এখন অধিকাংশ মাছই বাজারে বিক্রি করে দেন বৃদ্ধ। সামান্য কিছু বাড়ির জন্য রেখে দেন। স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল রায় বলেন, ‘চোখে না দেখে একজন কী করে নদীতে নেমে হাত দিয়ে মাছ ধরেন, সেটা নবীন মালাকারকে না দেখলে জানা যায় না।’