পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: শ্রম দপ্তর উত্তরবঙ্গের ৬৯টি চা বাগানে ক্রেশ তৈরি করেছে। কিন্তু সেগুলি পরিচালনার জন্য আগ্রহী স্বনির্ভর গোষ্ঠী পাচ্ছে না। তাই শ্রম দপ্তর ক্রেশগুলির দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিতে দ্বিতীয়বারের জন্য আবেদনপত্র চাইল। চলতি মাসের মধ্যে ৬৯টি ক্রেশের দায়িত্ব মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিতে তারা উদ্যোগী হয়েছে। রাজ্য শ্রম দপ্তরের টি ডিরেক্টরেটের ওএসডি অমরনাথ মল্লিক বলেন, ‘শীঘ্রই নতুন ৬৯টি ক্রেশ স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হবে।’
উত্তরবঙ্গে নির্মিত মোট ৭৬টি ক্রেশের মধ্যে আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) দলমোর, রামঝোরা, এথেলবাড়ি, মধু, তুলসীপাড়া, রিয়াবাড়ি ও বিজয়নগর চা বাগানের ক্রেশের দায়িত্ব আগেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬৯টি ক্রেশ তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। এগুলির মধ্যে দার্জিলিং (Darjeeling) জেলায় ৪৩টি, জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) ১৩টি, উত্তর দিনাজপুর, কালিম্পং ও কোচবিহারে ১টি করে এবং আলিপুরদুয়ারে ১০টি ক্রেশ তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। গত মার্চ মাসে শ্রম দপ্তর ক্রেশগুলি পরিচালনার জন্য আবেদনপত্র চেয়েও পায়নি। আলিপুরদুয়ারে মাত্র সাতটি ক্রেশের দায়িত্ব দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পরিচালনার দায়িত্ব স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিতে শ্রম দপ্তর পুনরায় আবেদনপত্র চেয়েছে। তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা নকুল সোনারের কথায়, ‘প্রচণ্ড গরমে চা শ্রমিকরা বাগানে পাতা তোলার কাজ করছেন। কিন্তু চা বাগানের ভাঙাচোরা ক্রেশে শিশুদের গরমের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। দ্রুত নতুন ক্রেশগুলি চালু করা প্রয়োজন।’
শ্রম দপ্তর সূত্রে খবর, যে সমস্ত চা বাগানে ক্রেশগুলি নির্মাণ করা হয়েছে সেই এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে আবেদন করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া ক্রেশে শিশু প্রতিপালনের প্রশিক্ষণ রয়েছে কি না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। অধিকাংশ গোষ্ঠীর সদস্যদের ক্রেশ দেখভালের মতো উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। এমনকি যে বাগানে ক্রেশ রয়েছে সেখানে অভিজ্ঞ স্বনির্ভর গোষ্ঠী পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক চা বাগানে স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কয়েক বছর ধরে সক্রিয় নেই। ফলে প্রথমবার শ্রম দপ্তর ক্রেশের দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন চাওয়ার পর আলিপুরদুয়ারের সাতটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ছাড়া অন্য কোনও গোষ্ঠী আগ্রহ প্রকাশ করেনি।
ক্রেশগুলিতে ছয় মাস থেকে শুরু করে ছয় বছরের শিশুকে রেখে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা দেখভাল করবেন। শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুষ্টির বিষয়টি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা দেখবেন। বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন চা বাগানে সকাল সাতটা থেকে দুপুর দুটো, সকাল সাড়ে আটটা থেকে আড়াইটে অথবা সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ক্রেশে শিশুদের দেখাশোনা করা হবে। একটু বড় বয়সের শিশুদের প্রাকপ্রাথমিকের পড়াশোনা সহ খেলাধুলোর ব্যবস্থা থাকবে।