মালবাজার: কথায় আছে ‘কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ’। এই প্রবাদ বাক্যই যেন ফলে গেল জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) মালবাজারে (Mal Bazar)। কী ঘটনা? বৃহস্পতিবার ভোরে মুরগিবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যান নিউ মাল টার্নিংয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে যায়। হোলির আগে এই সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করে? তাই গাড়ি উলটে যাওয়ার খবর চাউর হতেই নিমেষে ভিড় জমে যায় সেখানে। দেদারে চলল মুরগি লুট। যে যার মতো করে মুরগি নিয়ে ছুটলেন বাড়ির দিকে। কয়েকজন তরুণকে বলতে শোনা গেল, ‘হোলিতে জমিয়ে পার্টি হবে।’ আবার ঘটনার নিন্দাও করেছেন অনেকে।
এদিন ভোরে মালবাজার থেকে শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিল মুরগিবোঝাই পিকআপ ভ্যানটি। রাঙ্গামাটি পঞ্চায়েত অফিসের সামনে নিউ মাল টার্নিংয়ে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে যায়। বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। চালক ও সহযোগীকে উদ্ধার করে মাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সহযোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও, চালক আকবর বড়াইলি (৪০) হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর হাতে চোট লেগে লেগেছে।
এদিকে, দুর্ঘটনায় কিছু মুরগি মারা গেলেও বেশিরভাগই জীবিত ছিল। চালক, সহযোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতেই শুরু হয় মুরগি লুট। একাংশ লোকজনকে তখন পায় কে। হোলির আগে হাতের সামনে ‘খাজানা’ পেয়ে তখন তাঁদের পোয়াবারো! বাচ্চা, তরুণ-তরুণ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা- বাদ গেলেন না কেউই। অনেকে হাতে মুরগি নিয়ে দৌড়োলেন, আবার কেউ অতশত না ভেবে একেবারে বাজারের ব্যাগে পুরে ছুটলেন বাড়িতে। এমনই লুট চলল যে শেষপর্যন্ত পিকআপ ভ্যানের মধ্যে পড়ে ছিল মাত্র চার-পাঁচটি মুরগি। পরে পুলিশকর্মীরা গাড়িটি থানায় আসেন।
এক তরুণ মজা করে বললেন, ‘হোলির আগে মেনুতে মুরগি বাড়তি পাওনা।’ আবার আরেক পক্ষ বলছে, ‘এটা তো কারও পৌষ মাস, কারও সর্বনাশ।’ শহরের ব্যবসায়ী কৌশিক দে-র বক্তব্য, ‘বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, খাদ্যদ্রব্যবোঝাই গাড়ি উলটে গেলে কিছু লোক সেই সামগ্রী লুটের প্রতিযোগিতায় নামেন। কিন্তু ব্যবসায়ীর কতটা ক্ষতি হল, সেকথা কেউ চিন্তা করেন না।’
এদিকে, নিউ মালের টার্নিং বর্তমানে যানচালক ও পথচারীর কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝেমধ্যে ঘটছে দুর্ঘটনা। মোতায়েন করা হয়নি ট্রাফিক পুলিশ। মাল থানার তরফে জানানো হয়েছে, তারা প্রতিদিন নজরদারি চালাচ্ছে।