সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: একই টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বরে (টিআইএন) একাধিক টোটো চলছে। এমনই অভিযোগ টোটোচালকদের (Toto driver) একাংশের। অবশ্য যাঁদের টোটোকে ঘিরে এই বিতর্ক তাঁদের দাবি, পুরসভা তাঁদের এই নম্বর প্লেট দিয়েছে। এটা কীভাবে সম্ভব? টোটোচালকদের একাংশের অভিযোগ, শহরে চালানোর জন্য ভুয়ো নম্বর প্লেট তৈরি করা হয়েছে। এর আগে পুরসভার তরফে টোটোচালকদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছিল। সেসময় ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরির বিষয়টি সামনে আসে। তখন পুরসভা বাধ্য হয়ে তাঁদের দেওয়া সমস্ত পরিচয়পত্র বাতিল করে। এবার টোটো ইউনিয়নগুলির ভুয়ো টিআইএন ব্যবহারের বিষয়টি নজরে এসেছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এবিষয়ে এখনও কোনও অভিযোগ পাইনি। ভুয়ো টিআইএন ব্যবহার করার বিষয়টি ধরা পড়লে সেই চালকের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’
কয়েকদিন আগের কথা। একই টিআইএন লেখা নীল রংয়ের বোর্ড দুটি পৃথক টোটোর পেছনে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এবার শহরে (Jalpaiguri) টোটোচালকদের একাংশ ভুয়ো টিআইএন ব্যবহার শুরু করেছে? নাকি পুরসভার অন্দরে কোনও গরমিল রয়েছে? তবে ওই দুজন টোটোচালকের দাবি, তাঁরা পুরসভায় ৫০০ টাকা জমা দেওয়ার পরে টিআইএন-এর বোর্ড পেয়েছেন। সিটু অনুমোদিত ই-রিকশা ইউনিয়নের সম্পাদক শুভাশিস সরকারের কথায়, ‘একই টিআইএনের দুটি টোটো শহরে চলছে, এই অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। প্রশাসনকে দ্রুত এবিষয়ে পদক্ষেপ করার দাবি জানাই।’
আইএনটিটিইউসি টাউন ব্লক সভাপতি পুণ্যব্রত মিত্র জানান, এক ব্যক্তির একাধিক টোটো কিনে ব্যবসা, বাইরের টোটোচালককে টিআইএন দেওয়া, এক টিআইএন দিয়ে একাধিক টোটো চলা, এই বিষয়গুলি লিখিতভাবে পুরসভার নজরে আনা হয়েছে।
শহর ও শহরকেন্দ্রিক অরবিন্দ, খড়িয়া, পাহাড়পুর এবং পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের টোটোচালকদের টিআইএন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে, শহরের অনেক টোটোচালক টিআইএন নম্বর পাননি বলে অভিযোগ। অথচ ময়নাগুড়ি, হলদিবাড়ি ও দোমোহনির বাসিন্দাদের অনেকে পুরসভা থেকে টিআইএন পেয়েছেন। কীসের ভিত্তিতে তা দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে চালকদের মনে নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। শহরের এক টোটোচালক অমিত সূত্রধরের মন্তব্য, ‘সকালে বালাপাড়ার বাঁধের রাস্তায় দাঁড়ালে জলপাইগুড়ি পুরসভার টিআইএন প্লেট লাগানো টোটোগুলিকে ময়নাগুড়ি থেকে আসতে দেখা যায়। অথচ আমি শহরের বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও এখনও টিআইএন পাইনি। জানি না কীসের ভিত্তিতে বাইরের টোটোচালকদের টিআইএন দেওয়া হচ্ছে।’
একজন ব্যক্তিকে একটি টোটোর জন্য টিআইএন নম্বর দেওয়া হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ ঠিক করে। অভিযোগ, এমন অনেকে আছেন যাঁরা ৩০-৪০টি টোটো কিনে চালক রেখে ব্যবসা করছেন। এক টোটোচালকের বক্তব্য, ‘পান্ডাপাড়া এলাকার এক মহিলার প্রায় ৩০টি টোটো আছে। ওই মহিলা নিজে টোটোচালক নন। পুরসভা তাঁকে টিআইএন কেন দিল বুঝতে পারছি না।’