পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: চা শিল্পের জন্য বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি আর্দ্রতার সঠিক তথ্য থাকাও জরুরি। আর সেই তথ্য যদি আগাম জানা যায় সেক্ষেত্রে চা চাষে অনেকটাই সুবিধা হয়। আর সেই ভাবনা থেকেই বিভিন্ন বাগানে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্র বসাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। গতবছর আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ডুয়ার্সের বৃষ্টিপ্রবণ চা বাগান এলাকায় ৩০টি ওই ধরনের স্টেশন বসানো হয়েছিল। এবার আরও ২০টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্টেশন বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে একদিকে প্রবল বৃষ্টিপাতের সতর্কতা, অন্যদিকে চা শিল্পের সহযোগী আবহাওয়ার তথ্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিকিম আবহাওয়া বিভাগের অধিকর্তা ও আবহাওয়া বিভাগের উত্তরবঙ্গের মুখপাত্র গোপীনাথ রাহা।
ওই ২০টি নতুন স্টেশন থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাপ শুরু হয়েছে। এই যেমন ১৩ এপ্রিল গরুবাথানের ফাগুতে ৩৯ মিলিমিটার, গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানে ৬০ মিমি, ভার্নোবাড়িতে ৩৩.৮ মিমি, ডায়নাতে ২৮.৮ মিমি ও ওয়াশাবাড়িতে ৪৮ মিমি বৃষ্টি হয়েছিল।
আবহাওয়া বিভাগের দেড়শো বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গত বছর ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ৫০টি স্টেশন বসানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। গত বছর ৩০টি বসানোর পর বাকি স্টেশন এবছর বসানো হয়েছে।
আলিপুরদুয়ারের ভুটান ও অসম সীমান্তবর্তী তোর্ষা, কুমারগ্রাম, ভার্নোবাড়ি, সংকোশ, ভাতখাওয়া, সুহাষিণী, দলগাঁও, বিচ, মাঝেরডাবরি, ডিমার মতো চা বাগানে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্টেশন বসানো হয়েছে।
জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও ভুটান সীমানায় ইংডং, জুরন্তী, ওয়াশাবাড়ি, লিসরিভার, হিলা, গাঠিয়া, গুডহোপ, গয়েরকাটা, গ্যান্দ্রাপাড়া, গুরজংঝোরা, ডায়না, আইভিল, কৈলাশপুর, কুমলাই, বড়দিঘি, বাতাবাড়ি এবং ফাগু চা বাগানে স্টেশন বসেছে।
এর আগে ওই কেন্দ্রগুলি প্রধান প্রধান এলাকায় বসানো হয়েছিল। এবার সেগুলো প্রত্যন্ত এলাকায় বসানো হয়েছে। গোপীনাথের কথায়, ‘ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ের এই চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পরিস্থিতি তৈরির সম্ভাবনা হবে কি না তার খবর আগাম জানা যাবে। এতে সকলকে সতর্ক করাও যাবে। দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে নতুন ১০টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষেণকেন্দ্র বসানো হবে।’
চা মালিকদের কনসালটেটিভ কমিটি ফর প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘চা শিল্পে বৃষ্টির সঙ্গে অত্যধিক গরমের তথ্য যেমন প্রয়োজন, তেমনি আর্দ্রতার হিসেব রাখাও জরুরি। আবহাওয়া দপ্তরের এই স্টেশনগুলি চা শিল্পের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়াবে।’