Jagdeep Dhankhar | ১২ দিন আগেই মেয়াদ শেষে অবসরের কথা জানান! সেই ধনকরের হঠাৎ ইস্তফা কেন? চর্চায় ৩ কারণ

Jagdeep Dhankhar | ১২ দিন আগেই মেয়াদ শেষে অবসরের কথা জানান! সেই ধনকরের হঠাৎ ইস্তফা কেন? চর্চায় ৩ কারণ

ব্যবসা-বাণিজ্যের /BUSINESS
Spread the love


উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ১২ দিন আগেই জেএনইউতে এক অনুষ্ঠানে ২০২৭ সালের অগাস্টে পূর্ণ সময়ের মেয়াদ শেষে অবসর নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকর (Jagdeep Dhankhar)। কিন্তু সোমবার রাতেই বাদল অধিবেশনের প্রথম দিনেই ৭৪ বছর বয়সি ধনকর বেনজিরভাবে তাঁর উপরাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদকালে ইতি টেনে দিলেন। রাষ্ট্রপতিকে লেখা ইস্তফাপত্রে (Resignation) নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা বললেও যিনি কয়েক ঘণ্টা আগেও রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি হঠাৎ কেন এই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কার্যত নিঃশব্দেই ধনকরের বিদায় পর্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। যাকে একসময় ‘কিষাণ পুত্র’ এবং ‘অনুপ্রেরণাদায়ক’ বলে উল্লেখ করেছিলেন সেই ধনকরের ইস্তফার ১৫ ঘণ্টা পর টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। নীরবই থেকে গিয়েছেন বিজেপির তাবড় মন্ত্রীরা।

চলতি বছরের শুরুতে ধনকরের হৃদরোগের চিকিৎসা হয় এটা ঠিক, ২৫ জুন তিনি নৈনিতালে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এটাও ঠিক, কিন্তু রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, অসুস্থতাই যদি ইস্তফার কারণ হয়ে থাকে তাহলে বর্ষাকালীন অধিবেশনের আগেই তিনি তা ঘোষণা করতে পারতেন। সংসদে ঘটনাবহুল প্রথম দিনের পর সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ উপরাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সপ্তাহের শেষের দিকে জয়পুরে তাঁর ভ্রমণের সূচি নির্ধারিত করা হয়েছে। তার কয়েক ঘণ্টা পরই ইস্তফা রহস্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ধনকরের এই হঠাৎ বিদায়ের নেপথ্যে মূলত ৩ টি কারণ নিজে জোর জল্পনা চলছে।

১) উপরাষ্ট্রপতি পদে নীতীশ?

জল্পনা, নীতীশ কুমারকে উপরাষ্ট্রপতি করার পথ প্রশস্ত করতে এই ইস্তফা। বিহারে এবার অধিক আসনে জয়কে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। পাশাপাশি এবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদও চাইতে পারে বিজেপি। তাই আগে থেকেই নীতীশ কুমারকে সম্মানজনক পুনর্বাসন দিয়ে রাখতে চাইছে দল। যাতে বিহারে সরকার ও জোটে কোনও সমস্যা না হয়। মঙ্গলবার, বিজেপি বিধায়ক হরিভূষণ ঠাকুর এই জল্পনাকে আরও তীব্র করে তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘নীতীশ কুমারকে উপরাষ্ট্রপতি করা হলে বিহারের জন্য খুব ভালো হবে।’

২) অপমানের জেরে বিদায়?

সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনে বিরোধীদের একটি প্রস্তাব গ্রহণ এবং বিজেপি নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অনুপস্থিতি ধনকরের ইস্তফার পেছনে কারণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার, ধনকর ঘোষণা করেন যে তিনি বিচারপতি যশবন্ত ভার্মাকে অপসারণের জন্য ৬৮ জন বিরোধী সাংসদের স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ পেয়েছেন, যার বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে এবং তিনিও তা স্বীকার করছেন। একদিকে সরকার যখন লোকসভায় তাদের আনা একটি প্রস্তাব উত্থাপন করছিল, তখন বিরোধী দলের নোটিশের উপর উপরাষ্ট্রপতির তাড়াহুড়ো সরকারপক্ষ খুব একটা সহজভাবে নেয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, সোমবার রাজ্যসভার বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির (Enterprise Advisory Committee) বৈঠক ছিল। প্রথম বৈঠকটি হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। সেখানে নাড্ডা এবং সংসদীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু দু’জনেই ছিলেন। কিন্তু বিকেল সাড়ে ৪টেয় ফের বৈঠক হলে সেখানে হাজির হননি দুই মন্ত্রী। যা সরকারের থেকে ইঙ্গিতবাহী বার্তা ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। তা বুঝতে পেরেই সরে যেতে পারেন ধনক্র। তবে নাড্ডা বলেছেন য, মন্ত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত ছিলেন এবং রাজ্যসভার চেয়ারপার্সনকে আগেই জানিয়েছিলেন।

৩) বিচার বিভাগের সঙ্গে ঘনঘন সংঘাত

সম্প্রতি বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে ধনকরের কড়া মন্তব্য দল ও সরকারের অস্বস্তি তৈরি করেছে। বিশেষ করে ‘বিচারালয়ের বাড়াবাড়ি’ এবং ন্যাশনাল জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশন (Nationwide Judicial Appointments Fee) আইন বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা, সরকারের একাংশকে অসন্তুষ্ট করে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যা উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ধনকরের বিদায়কে ত্বরান্বিত করেছে।

ধনকরের ইস্তফার পর মঙ্গলবার, তিনি রাজ্যসভার সভাপতিত্ব করতে যাননি। নিয়ম অনুসারে, চেয়ারপার্সনের অনুপস্থিতিতে, রাজ্যসভার কার্যক্রম ডেপুটি চেয়ারপার্সনের সভাপতিত্বে পরিচালিত হয়। জেডি(ইউ)-এর হরিবংশ নারায়ণ সিং ২০২০ সাল থেকে এই দায়িত্ব পালন করছেন। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত অধিবেশনের বাকি সময় হরিবংশ সভাপতিত্ব করবেন। তাই সংসদের উচ্চকক্ষে বিহারের একজন নেতার নেতৃত্ব দেওয়ার ছবিটা নির্বাচনের আগে এনডিএকে বাড়তি মাইলেজ দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

ধনকরের ইস্তফা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আপাত নির্লিপ্ত প্রতিক্রিয়াকেও আতশকাচের নীচে ফেলছে বিরোধী শিবির। মোদি এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘জগদীপ ধনকর উপরাষ্ট্রপতি সহ নানা পদে দেশ সেবার একাধিকবার সুযোগ পেয়েছেন। আমি আশা রাখি, তার শরীর-স্বাস্থ্য আগামী দিনে ভালো থাকবে।’ মোদির এই মন্তব্যে সাউথ ব্লকের সঙ্গে ধনকরের সংঘাতের ইঙ্গিত লুকিয়ে রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। সব মিলিয়ে রহস্য একটা থাকলেও কিছুতেই দুয়ে দুয়ে চার করতে পারছে না রাজনৈতিক মহল।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *