বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: দুর্গাপুজো দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে তিন নাবালিকা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইটাহার থানা এলাকার একটি গ্রামে (Itahar)। অষ্টমীর দুপুরে পুজো দেখতে বেরিয়েছিল ওই তিন বান্ধবী। অজপাড়াগাঁয়ের মেয়েরা পুজো দেখতে যায় রায়গঞ্জ শহরে। ৩০ তারিখ রাতভর বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন ইটাহার থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তাদের হদিস না মেলায় শুক্রবার পুলিশ সুপারের অফিসের দ্বারস্থ হয়েছে নিখোঁজ নাবালিকাদের পরিবার। রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আক্তার বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ওই তিন নাবালিকাকে খোঁজার চেষ্টা চলছে। নিখোঁজের পিছনে কী কারণ রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজ নাবালিকাদের একজনের বয়স ১৩ বছর, অপর দুজনের বয়স ১৫ বছর। স্থানীয় হাইস্কুলের দুজন অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। একজন নবম শ্রেণির ছাত্রী। নিখেঁাজ এক নাবালিকার মা বলেন, ‘অষ্টমীর দিন দুপুরে তিন বান্ধবী মিলে রায়গঞ্জে পুজো দেখতে গিয়েছিল। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও ওদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। যে কারণে আমরা ইটাহার থানার দ্বারস্থ হই।’ তিনি জানান, ১ অক্টোবর তাঁরা নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু পুলিশ কোনওকিছুই জানাতে পারেনি। তাদের খুঁজে বার করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘তিনদিন হয়ে গেল আমার মেয়ে সহ তিন বান্ধবী বাড়ি না ফেরায় পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছি। নিখোঁজ নাবালিকাদের মধ্যে একজনের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে। ফোন করলে সুইচ অফ বলছে।’ নিখোঁজ নাবালিকাদের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ে ও দুই বান্ধবীর কোনও ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও নেই। কোনওদিন এরকম কথা শুনিনি। মেয়ের আচরণের মধ্যেও কোনও প্রকাশ পায়নি, তাহলে আমার মেয়েরা গেল কোথায়? পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।’ আরেক নাবালিকার মা বলেন, ‘কোনও ছেলের সঙ্গে পালিয়ে যাবে এই ধরনের সন্দেহ আমাদের নেই। কারণ আমরা জানি ওই তিন মেয়ের মধ্যে কারওই স্বভাব, আচার-আচরণ ওই ধরনের ছিল না। আমরা নিশ্চিত কেউ ওদেরকে অপহরণ করে অন্যত্র পাচার করে দিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।’
রায়গঞ্জ জেলা আদালতের আইনজীবী বিশ্বরূপ দেবের কথায়, ‘৩০ তারিখে ওই তিনজন নাবালিকা নিখোঁজ হয়। বহু খোঁজাখুঁজি করেও তাদের কোনও হদিস পায়নি পুলিশ। চলতি মাসের ১ তারিখে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। কিন্তু ইটাহার থানার পুলিশের কাছে সাহায্য না পেয়ে অবশেষে এসপি’র দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার।’