Islampur | রাস্তা নাকি জলাশয়, ধরতে পারবেন না!

Islampur | রাস্তা নাকি জলাশয়, ধরতে পারবেন না!

ব্লগ/BLOG
Spread the love


অরুণ ঝা, ইসলামপুর: টোটোতে সওয়ার যাত্রী থেকে বাইকে পেছনের সিটে বসা তরুণ, প্রত্যেকের চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ। রীতিমতো কেরামতি দেখাতে হয় ওই রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময়। অসাবধান হলেই বিপদ।

কেন এমন অবস্থা? পিচের রাস্তাজুড়ে ছোট-মাঝারি-বড় আকারের একাধিক গর্ত। বৃষ্টির জল জমলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। ইসলামপুর শহর থেকে মাটিকুন্ডা পর্যন্ত রাজ্য সড়কের কাজ বর্তমানে থমকে। ফলে রাস্তাটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন আমজনতা। দুর্ঘটনা ঘটছে মাঝেমধ্যে। অভিযোগ, সেসব নিয়ে হেলদোল নেই পূর্ত দপ্তরের। পূর্ত কর্তারা অবশ্য সমস্যা স্বীকার করে নিয়ে বর্ষা এবং সড়ক নির্মাণের সামগ্রী সরবরাহে বিলম্ব হওয়াকে দায়ী করছেন।

পাটাগড়া থেকে ইসলামপুর (Islampur) পর্যন্ত নতুন করে সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন সড়ক-যন্ত্রণা সহ্যের পর চলতি বছর শুরু হয় কাজ। মাটিকুন্ডা সংলগ্ন যে এলাকায় সেতু নির্মাণ শুরু হয়েছে, পাটাগড়া থেকে সেই পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ শেষ। তারপর থেকে অর্থাৎ মাটিকুন্ডা থেকে ইসলামপুর শহরের তিনপুল অবধি সড়কের অধিকাংশ জায়গার ছবিটা উদ্বেগজনক। মাঝে কিছু অংশে কাজ হয়েছে, তাতে অবশ্য ভোগান্তিতে মলম লাগানো সম্ভব হয়নি।

দিনকয়েক আগে ইসলামপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তিনপুল থেকে রাজ্য সড়ক ধরে বাইক নিয়ে এগোতেই খানাখন্দ নজরে এল। বৃষ্টির জমা জল কোনওমতে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন টোটো, চার চাকার যাত্রীবাহী গাড়ি, ভুটভুটি ও বাইকচালকরা। কাদায় মাখামাখি চারপাশ। পথে আলাপ হল দিলীপ ঘোষের সঙ্গে। দিলীপের কথায়, ‘জীবিকার টানে রোজ এদিক দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। আমি তিনবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি। চোখের সামনে আরও অনেকগুলো দেখেছি। হঠাৎ করে কেন সড়ক নির্মাণ বন্ধ হয়ে গেল, জানি না।’

এব্যাপারে পূর্ত দপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ ভট্টাচার্যের যুক্তি, ‘বর্ষার কারণে এজেন্সি কাজ করতে পারছে না। এছাড়া নির্মাণসামগ্রী সরবরাহ নিয়েও সমস্যা রয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শেষের চেষ্টা চালাচ্ছি।’

পুর এলাকা পেরিয়ে রিংকুয়া পৌঁছোতেই রাস্তা দেখে মনে হল যেন ছোটখাটো পুকুর। স্থানীয় বধূ রিয়া চাকি টিউশন পড়াতে রোজ ইসলামপুরে আসেন। তাঁর গলায় ক্ষোভের সুর, ‘টোটোতে যাতায়াত করি। চালক মাঝেমধ্যেই অসাবধানতাবশত জোর গতিতে গর্তে চাকা নামিয়ে দেন। লাফিয়ে ওঠে টোটোটি। মাথায় চোট লাগে। কোমরের হাড়েও আঘাত পেয়েছি। এখন চিকিৎসক আর পরীক্ষানিরীক্ষার চক্করে পড়ে মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে।’

খানিকটা এগোলে ফুলবাড়ি। ছবি তুলতে দেখে স্থানীয় ইফতিকার আলমের প্রশ্ন, ‘লাভ হবে কি আদৌ? কর্তৃপক্ষের তো টনক নড়ছে না কিছুতেই। আমাদের কষ্ট নিয়ে কেউ ভাবে না।’ ফুলবাড়িকে পেছনে রেখে মাটিকুন্ডায় ঢুকলে আতঙ্ক জাগে মনে। যাত্রীবোঝাই একটি টোটোর চাকা গর্তে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল, কোনওমতে সামলে নিলেন চালক। তারপর রাস্তার এককোণে দাঁড় করিয়ে সেই চালক মহম্মদ আলম বললেন, ‘রাস্তার বেহাল দশার কারণে গাড়ির ক্ষতি হয়। আমাদেরও আর্থিক ক্ষতি হয়।’

মাটিকুন্ডা বাজারের পরিস্থিতি ভালো নয়। অসন্তুষ্ট মাটিকুন্ডা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান চায়না মোদক। বলছিলেন, ‘রোগীদের ভোগান্তি চরমে। অ্যাম্বুল্যান্স কিংবা টোটোতে চড়ে হাসপাতাল পৌঁছতে গিয়ে তাঁরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।’



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *