উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ‘আপনারা আমাদের জল আটকে দিলে, আমরা আপনাদের নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেব।’ ভারতের বিরুদ্ধে মৌখিক আক্রমণ শানাতে গিয়ে এমনই ভাষার প্রয়োগ করতে দেখা গেল পাক সেনার মুখপাত্র, লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরিকে। বৃহস্পতিবার একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এই কথাগুলি বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৬০-এ স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলচুক্তি (Indus Waters Treaty) অনুযায়ী সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা নদীর জল ব্যবহারের অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের। বিপরীতে ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রুর জলের অধিকার রয়েছে ভারতের কাছে। যদিও সবকটি নদীই ভারতের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছে। অর্থাৎ, উজানের দেশ হিসাবে ৬টি নদীর জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে ভারতের।
সাড়ে ৬ দশক আগে হওয়া চুক্তিকে মান্যতা দিয়ে এতদিন সিন্ধু, ঝিলম ও চন্দ্রভাগা নদীর ওপর বাঁধ দেয়নি ভারত। কিন্তু পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করার কারণে ভারতের সামনে আর সিন্ধুর জলপ্রবাহ অবাধ রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। অদূর ভবিষ্যতে ভারত সিন্ধুতে বাঁধ দিলে জলশূন্য হয়ে পড়বে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ। সেদেশের কৃষিপণ্যের পাঁচ ভাগের চার ভাগ জোগান আসে এই রাজ্যটি থেকে। সিন্ধুর মূল প্রবাহ থেকে সেচখালের মাধ্যমে চাষ হয় পাক পঞ্জাবে। জল না পেলে ভেঙে পড়বে পাকিস্তানের কৃষি ব্যবস্থা, যার ওপর সেদেশের ৭০ শতাংশ মানুষের রুজি-রুটি নির্ভর করছে। এছাড়া পঞ্জাব ও সিন্ধু প্রদেশের সবকটি বড় শহর জল সরবরাহের জন্য সিন্ধুর ওপর নির্ভর করে। এর থেকেই সিন্ধু জলচুক্তির গুরুত্ব বোঝা যায়।
এই আবহে পাক সেনার শীর্ষকর্তার এমন বক্তব্য পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মুম্বই হামলার মূল চক্রী তথা লস্কর-ই-তৈবার প্রধান হাফিজ সইদকে সম্প্রতি একটি ভিডিওতে ঠিক একই ধরনের কথা বলতে শোনা গিয়েছিল(ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি উত্তরবঙ্গ সংবাদ)। এবার সেই একই সুর পাক সেনার শীর্ষকর্তার গলাতেও শোনা যাওয়ার বিষয়টি যে ভারত এড়িয়ে যাবে না, সে কথা বলাই বাহুল্য।