সুস্মিতা গঙ্গোপাধ্যায়, কলকাতা: দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক এখন ঠিক কোন জায়গায় সেই বিষয় খুব পরিষ্কার নয়।তবে বাংলাদেশ ফুটবল দল শিলংয়ে খেলতে এসে অবশ্য একেবারেই সৌহার্দ্য দেখাচ্ছে না। এদেশে পৌঁছোনোর পর থেকে ক্রমাগত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করেই চলেছে বাংলাদেশ দল। বিশেষ করে ট্রেনিং গ্রাউন্ড, মাঠে নৈশালোকের ব্যবস্থা, এসব নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই তাদের।
প্রথমদিন পৌঁছোনোর পরই তাদের হোটেল নিয়েও নাকি সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। যতগুলো ঘর চাওয়া হয়েছিল, সব নাকি হোটেল কর্তৃপক্ষ শুরুতে দিতে রাজি হয়নি। পরে অবশ্য সেই সমস্যা মেটে। সকলেই আলাদা আলাদা ঘর পেয়ে যায়। এমনকি তাদের সময় অনুযায়ী অনুশীলনের ব্যবস্থা করাও হয়নি বলে ওদেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এমনকি দলের ম্যানেজার এও বলেন যে, সব দেশই হোম গ্রাউন্ডে খেলার সুবিধা নেওয়ার জন্য অনেককিছুই করে। যা ভারত করছে। তাদের সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে এও বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ যখন হোম ম্যাচ খেলবে অর্থাৎ ভারতের অ্যাওয়ে ম্যাচের সময়ে তারাও নিজেদের মতো করে সবকিছু করবে। অর্থাৎ এখন থেকেই ভারতের জন্য যে সমস্যা তৈরি করা হবে, সেকথা বলে দেওয়া হচ্ছে।
মজার কথা হল, নানা অভিযোগ তোলা হলেও ওদেশের সংবাদমাধ্যমকে আবার দলের পক্ষে একথাও বলা হয়েছে যে, বাফুফের (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) তরফ থেকে আগে শিলংয়ে কাউকে পাঠানো হয়নি ওখানকার হোটেল, অনুশীলন বা মাঠ দেখার ব্যবস্থা করার জন্য। যা সাধারণত বিভিন্ন দেশ করে থাকে। তাছাড়া নৈশালোক সঠিক সময়ে না জ্বলা নিয়ে অভিযোগ থাকলেও পরে স্বীকার করা হয়েছে যে বিভিন্ন স্তম্ভ জ্বলতে সময় লাগার জন্য আলো কম বলে শুরুতে মনে হয়েছে। সবমিলিয়ে, ম্যাচ শুরুর আগেই নানা সমস্যার কথা বলে চাপ সৃষ্টির খেলা খেলতে চাইছে বাংলাদেশ।
শুধু তাই নয়, তাদের দলের হামজা চৌধুরীকে দেখে ভারত ভয় পেয়েছে, এমন কথা বলেও আত্মতৃপ্তিতে ভুগছে বাংলাদেশ। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের শক্তি দেখে ভয় পেয়েই সুনীল ছেত্রীকে ফেরানো হয়েছে। ভারতীয় দল অবশ্য প্রতিপক্ষের এই চাপ সৃষ্টির খেলায় চিন্তিত যেমন নয় তেমনি ওই ফাঁদে পা’ও দিচ্ছে না। বরং মালদ্বীপ ম্যাচ জিতে এখন আত্মবিশ্বাস ফেরালেও আত্মতুষ্টিতে যাতে দল না ভোগে সেদিকেই কড়া নজর এখন মানোলো মার্কুয়েজের। অধিনায়ক সুনীলও বোঝাচ্ছেন তরুণ প্রজন্মকে। মানোলোতে বলেই দিয়েছেন, ‘মালদ্বীপকে হারিয়ে খুশি কারণ এতে দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। কিন্তু আমাদের আসল উদ্দেশ্য হল, এশিয়ান কাপে যোগ্যতার্জন করা। তাই এখন বাংলাদেশ, হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাকি ৬টা ম্যাচই আমাদের কাছে ফাইনালের মতো। যেখানে সব ম্যাচ জিতে মূলপর্বে পৌঁছোতে হবে।’ শেষপর্যন্ত সেটা তাঁর দল করে দেখাতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার।