IIM জোকার ছাত্রের সঙ্গে ক্যাবে হস্টেলে মনোবিদ, ছিলেন আড়াই ঘণ্টারও বেশি! ধর্ষণ কাণ্ডে নয়া তথ্য

IIM জোকার ছাত্রের সঙ্গে ক্যাবে হস্টেলে মনোবিদ, ছিলেন আড়াই ঘণ্টারও বেশি! ধর্ষণ কাণ্ডে নয়া তথ্য

জীবনযাপন/LIFE STYLE
Spread the love


অর্ণব আইচ: আইআইএম জোকা ক্যাম্পাসে তরুণী ‘মনোবিদ’ ছিলেন ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। ধর্ষণের ঘটনায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। আইআইএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারিণী একসঙ্গে বাইরে থেকে একটি ক্যাব ধরে ক্যাম্পাসে আসেন। ক্যাম্পাসের নিয়ম মেনে সিকিউরিটি অফিসারকে আগাম মেল করে অভিযুক্ত জানিয়েছিল যে, তার এক বন্ধু দুপুরে ক্যাম্পাসে আসছেন। বিকেল ৩টে ১০ মিনিট নাগাদ তরুণী ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে একটি ক্যাব বুক করে বেরিয়ে যান।

এদিকে, কেনই-বা অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রের ‘মনোবিদ’ দরকার হল, তা নিয়ে পুলিশ সন্দিহান। আবার অভিযোগকারিণী সত্যিই পেশাদার ‘মনোবিদ’ কি না, তিনি কোথা থেকে কোর্স করেছেন, তা পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। তাহলে অভিযোগকারিণীর বাবা কেন ‘স্টাডি মেটেরিয়াল’-এর জন্য আইআইএম জোকায় তাঁর মেয়ে যান বলে দাবি করেন, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। আইআইএম জোকায় হস্টেলে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে আরও অসঙ্গতি।

এই ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা ‘সিট’ তৈরি করল কলকাতা পুলিশ। ন’সদস্যের ‘সিট’-এর মাথায় রয়েছেন একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক। তদন্ত শুরু করে আইআইএম জোকার সিসিটিভির ফুটেজ, প্রত্যেকটি রেজিস্ট্রার খাতা, ডিউটিতে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের পরিচয় চেয়ে চিঠি দিয়েছে ‘সিট’। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত ও ধৃত এমবিএ ছাত্র পরমানন্দ তা সরাসরি স্বীকার করতে না চাইলেও তার ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ ও জেরার মুখে তার বক্তব্যে আধিকারিকরা অনেকটাই নিশ্চিত যে, ‘লেক ভিউ’ হস্টেলের ২৫১ নম্বর রুমে ওই তরুণীর যৌন নির্যাতন তথা ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত তরুণীর পিৎজা, জল ও ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধের পাউডার মিশিয়ে দেয়। তাতেই ঝিমিয়ে পড়েন তরুণী।

তিনি অসুস্থ অবস্থায় ওয়াশরুমে গিয়ে বমি করতে চাইলেও তাঁকে করতে দেওয়া হয়নি। উল্টে তাঁকে মারধর করা হয়। অচেতন অবস্থায় তাঁকে যৌন নিগ্রহ করার পর অভিযুক্ত কয়েকজন পরিচিতকে ফোন করেছিল। তরুণীর কোনও অশ্লীল ভিডিও মোবাইলে তুলেছিল কি না, পুলিশ জানার চেষ্টা করছে। হস্টেলের ২৫১ নম্বর রুমে অভিযুক্ত পরমানন্দ একাই থাকত। সেই কারণে ওই ঘরে তরুণীকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার সুবিধাই হয়। রাজ্য মহিলা কমিশনও ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য জোকায় ঘটনাস্থলে যেতে চেয়েছে।

এই ধর্ষণের ঘটনাক্রম নিয়ে দেখা দিয়েছে বেশ কিছু অসঙ্গতি। অভিযোগকারিণী পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন যে, তিনি রেজিস্ট্রার খাতায় কোনও সই না করেই সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে ভিতরে প্রবেশ করেছিলেন। রাত ৮টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চলে। কিন্তু আইআইএম জোকা কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছে যে, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার সময় গেটের রেজিস্ট্রারে সই করেই তরুণী ভিতরে প্রবেশ করেন। এর ১৫ মিনিট পর দুপুর পৌনে একটায় তরুণী লেক ভিউ হস্টেলের খাতায় সই করেন। বিকেল ৩টে ১০-এ তিনি ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েছিলেন, এমন তথ্য রয়েছে রেজিস্ট্রার খাতায়। যদিও খাতা পরীক্ষা করে ওই তথ্য যাচাই করবে পুলিশ।

সেদিনই সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ তরুণী ঠাকুরপুকুর থানায় যান। সেখানে বসে অভিযোগপত্র লেখার পর তাঁকে পুলিশ নিয়ে যায় হরিদেবপুর থানায়। রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে অভিযোগ দায়ের হয়। যেহেতু তাঁকে মাদকাচ্ছন্ন করে ধর্ষণের অভিযোগ, তাই এসএসকেএমের নিউরো বিভাগে তাঁর পরীক্ষা হয়। তরুণী তাঁর পোশাক ফরেনসিকে পাঠাতে ও মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে রাজি হননি। অভিযুক্ত ছাত্রকে আইআইএম জোকায় নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্গঠন করা হচ্ছে। এক আধিকারিক জানান, তরুণীর বয়ানের সঙ্গে ঘটনাক্রম মেলানোর জন্য রাস্তা ও আইআইএম জোকার সিসিটিভির ফুটেজ ও রেজিস্টার খাতাগুলি পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।



Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *