শীতলকুচি: চাকরির প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় একই দিনে শীতলকুচি ব্লকের ৩৪টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে (ICDS Middle) তালা ঝোলালেন জমিদাতারা। সোমবার ওই ঘটনায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হলেন কয়েক হাজার শিশু ও গর্ভবতী মহিলা। তালা ঝোলানোর পর পেটলা নেপড়া গ্রামের ২৮৭ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে জমিদাতারা একত্রিত হয়ে বৈঠক করেন। জমিদাতা সামসুল হক বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট দপ্তর সহায়িকা পদে নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে এবং রেজাল্ট প্রকাশ করেছে। তাতে জমিদাতাদের পরিবারের কারও নাম নেই।’
যদিও এদিন শীতলকুচির সিডিপিও প্রীতম বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, সোমবার বিকাল পর্যন্ত সাতটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা দেওয়ার খবর তাঁর কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘জমিদাতাদের কোনও দাবি থাকলে দপ্তরে এসে লিখিত আকারে জানাক এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আমার অনুরোধ এভাবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা মেরে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করা যাবে না। জমিদাতাদের সঙ্গে কথা বলা হবে।’
অভিযোগ, জমিদাতার পরিবারের সদস্যদের সহায়িকা পদে নিয়োগ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনও চিন্তাভাবনা নেই। তাই একই দিনে ব্লকের ৩৪ জন জমিদাতা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা ঝুলিয়েছেন। বিষয়টিতে সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের তালা খোলা হবে না বলে তাঁরা হুমকি দিয়েছেন। সামসুলের কথায়, ‘কর্মীরা বিকল্প ব্যবস্থা করে শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পরিষেবা চালু রাখুক। প্রয়োজনে সহযোগিতা করা হবে।’
জমিদাতারা জানান, এখনও ২৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকা নেই। ওই কেন্দ্রগুলিতে জমিদাতার পরিবারের মহিলারা রান্না করে চলেছেন বিনা পারিশ্রমিকে। ওই কেন্দ্রগুলিতে পরীক্ষার মাধ্যমে সহায়িকা নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে নতুন করে সহায়িকা নিয়োগ করা হলে কাজ হারাবেন জমিদাতার পরিবারের মহিলারা। বেশিরভাগ কেন্দ্রে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বিনা পারিশ্রমিকে রান্না করেছেন তাঁরা। সেই কারণে আন্দোলন সংগঠিত করছেন জমিদাতারা। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত গাদোপোঁতা গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের জমিদাতা হেমন্ত বর্মন বলেন, ‘জমিদান করার পরে ১২ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে রান্না করে যাচ্ছেন আমার স্ত্রী। চাকরির প্রতিশ্রুতি পেয়ে জমি দিয়েছিলাম। এখন নতুন করে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ শুরু হয়েছে। অথচ জমিদাতাদের সহায়িকা পদে নিয়োগ করা হবে কি না এবিষয়ে কোনও নোটিশ বা আশ্বাস মিলছে না। তাই সকলে মিলে একসঙ্গে আন্দোলনে শামিল হয়েছি।’
আর এক জমিদাতা হেমন্ত বর্মনের কথায়, ‘আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এবিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাই আমরা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা দিয়েছি।’