হায়দরাবাদ ও নয়াদিল্লি: উষ্ণায়ন কমাতে আরও বেশি করে গাছ লাগানো, গাছের প্রতি যত্ন নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তেলেঙ্গানার কাঞ্চা গাচিবাউলিতে কিন্তু উলটো ছবি। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কাঞ্চা গাচিবাউলির ৪০০ একরের বনভূমি কেটে সাফ করার উদ্যোগ নিয়েছে তেলেঙ্গানা সরকার। আইটি পার্ক গড়তে বনাঞ্চলের জমি নিলাম হবে। সেজন্য গাছ কাটার ধুম পড়ে গিয়েছে প্রশাসনের। টানা পাঁচদিন ধরে চলে বৃক্ষছেদন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছে। শীর্ষ আদালত পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এখানকার একটা গাছও আর কাটা যাবে না।
বনাঞ্চল বাঁচাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কে পরমেশ্বর। বিক্ষোভ শুরু করেন হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আপাতত আর কোনও গাছের প্রাণ যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের বাড়তি নির্দেশ ছিল, জায়গাটি পরিদর্শন করে তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে রিপোর্ট দাখিল করতে হবে শীর্ষ আদালতে।
বিচারপতি বিআর গাভাই ও মসিহের বেঞ্চ জানিয়েছে, গাছেদের সুরক্ষা দিতে হবে। এটা রাজ্য সরকারের দায়িত্ব। শিক্ষার্থীদের দাবি, বনাঞ্চল নিলামের সরকারি সিদ্ধান্ত তুলে নিতে হবে। শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে তুলে ধরা ছবিতে কাটা অবস্থায় প্রচুর গাছ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। ছবিতে ময়ূর, বিভিন্ন ধরনের পাখি, বন্যপ্রাণীদেরও দেখা গিয়েছে। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, এ থেকে বোঝা যাচ্ছে এটা বনাঞ্চল। প্রচুর বন্যপ্রাণী রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ আছে, কোনও বনাঞ্চলের গাছপালা কাটতে চাইলে পাশাপাশি বনসৃজনও করতে হবে। গাছ কাটার আগে গাছ লাগাতেও হবে। বনভূমি গড়া হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য বিধিবদ্ধ কমিটি গড়তে হবে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। তা না হলে মুখ্যসচিব ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।
তেলেঙ্গানার প্রবাণ আইনজীবী গৌরব আগরওয়াল জানান, যে জায়গার কথা বলা হচ্ছে, সেটি বনাঞ্চল নয়। বিচারপতি গাভাই তখন বলেন, বন হোক বা নাই হোক, আপনারা কি গাছ কাটার অনুমতি নিয়েছিলেন? আমরা একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই, ‘যে যত উঁচু পদে থাকুন না কেন কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন।’ সুপ্রিম কোর্ট মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে, উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত জরুরি পর্যায়ে নিয়েছে এই মর্মে তেলেঙ্গানা সরকারকে হলফনামা দিতে হবে। শীর্ষ আদালত মুখ্যসচিবকে সতর্ক করে দিয়েছে, আদালতের নির্দেশ হুবহু পালিত না হলে মুখ্যসচিবই ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন।